Bangladesh: হুংকারই সার! বদলের পর ভারতের থেকেই সবচেয়ে বেশি মাল কিনেছে বাংলাদেশ…

Estimated read time 1 min read
Listen to this article


সেলিম রেজা, ঢাকা: গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয় ৮ আগস্ট। ওই সময় থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা-সহ অনেকের বক্তব্যেই ভারতবিরোধিতা ও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা উঠে এসেছে। নাগরিক পর্যায়েও ভারতীয় পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর ডাক দিয়েছেন অনেকেই। যদিও দুই দেশের বাণিজ্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রকৃতপক্ষে পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা আরও বেড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।

ভারতে অর্থবছরের হিসাব শুরু হয় এপ্রিল থেকে। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ ভারতীয় অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (এপ্রিল-জানুয়ারি) বিশ্বব্যাপী ভারতের পণ্য রফতানির প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যদিও এ সময় বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি বা ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর গত জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী ভারতের পণ্য রফতানি সংকুচিত হয়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। যদিও একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন:Road Accident: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল বাইক! ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেল জলজ্যান্ত দুই তরুণের…

যদিও গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর বাংলাদেশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি নিম্নমুখী হয়ে উঠেছিল। জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে দুই দেশের বাণিজ্যে। টানা তিনদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ ছিল। আগস্টে ভারত থেকে আমদানি কমেছিল ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। একই সময়ে পেঁয়াজ, ডিম ও কাঁচালঙ্কার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজারদরে দেখা দেয় বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা। দামের ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে এসব পণ্য আমদানি করা হয় বিপুল পরিমাণে। এর পর থেকেই পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা আরও বেড়েছে।

ভারতীয় অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি করা পণ্যের অর্থমূল্য ছিল ৯৩৯ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল থেকে জানুয়ারি সময়ে আমদানি হয়েছে ৮৮০ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের পণ্য। শুধু গত জানুয়ারিতেই ভারত থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করেছে ১০৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারের। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আমদানি হয়েছিল ৯১ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের। ভারতের বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় তুলো। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্যশস্য। এছাড়া আমদানি হয় খনিজ ও জ্বালানি পণ্য, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য পণ্য ও সেবা। আর বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি হওয়া প্রধান পণ্য হল তৈরি পোশাক।

দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের পরিসংখ্যানগত চিত্র মূল্যায়নে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশ্লেষকরা বলছেন, জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি ও অধিকারকে উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু মানসিকতার কারণেই দুই দেশের সম্পর্কে এখন এ ধরনের বৈরিতা দেখা দিয়েছে। এ বৈরিতা এখন দুই দেশেই রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বাণিজ্য পরিসংখ্যানগুলো বলছে, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা রয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশ এখন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেলও আমদানি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের মধ্যেই ভারত থেকে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছিল। এ আমদানির ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন:Bhangar: ফের কলকাতার গায়েই কাটাখালে ভেসে উঠল রহস্যময় মৃতদেহ! এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য…

তবে ভিসা জটিলতার কারণে ভারতীয়দের সঙ্গে ব্যবসা করা এখন কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাক্তন পরিচালক এস এম জিল্লুর রহমান আজাদ জি ২৪ ঘণ্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনও অসুবিধা নেই। আমরা এ বাণিজ্যকে আরও ভালো করতে পারি। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হল ভিসা। আমাদের অনেক ব্যবসায়ীর এখনও ভিসা হচ্ছে না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। সারা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বন্দরগুলিকে ঘিরে যে আমদানিকারকরা ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, পণ্য কেনাবেচা করছেন, তাদের অধিকাংশই ভিসা পাচ্ছেন না। ফলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

অর্থনৈতিক প্রয়োজন রাজনৈতিক বিবেচনাকে ছাপিয়ে যাওয়ার কারণেই এখন বাংলাদেশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বাড়ছে বলে মনে করছেন ভারতীয় বাজাজ ব্র্যান্ডের বাংলাদেশের সার্ভিস সেন্টারের ম্যানেজার আল আমরান। জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বেড়েছে। বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত আমদানি নির্ভর। চিন ও ভারত থেকে কাঁচামাল না এলে বাংলাদেশ রফতানি করবে কী করে? বিষয়গুলো বাইরে থেকে সাদা চোখে দেখা যায় না। দুই দেশেরই পারস্পরিক সম্পর্কে একে অন্যের প্রতি মর্যাদাবোধের প্রকাশ থাকা উচিত। অর্থনৈতিক বিষয়গুলোয় আমরা গভীরভাবে সংযুক্ত। এর সঙ্গে কখনও কখনও রাজনীতি একই পথে না-ও এগোতে পারে, যেটা এখন দেখা যাচ্ছে। বাণিজ্যের অর্থই হল আমাদের প্রয়োজন আছে বলেই ভারত থেকে পণ্য আসে’।

Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours