সুনীত হালদার, হাওড়া: সহকর্মীদের মজাই কাল হল, হাওড়ার জুট মিলে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু ! মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হারাল তাঁর বাবাকে। অভিযোগ, মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে হাওড়ার বাউরিয়া জুট মিল শ্রমিকের ! গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
‘সাবের একটু নরম প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় , সহকর্মীরা নানাভাবে উত্যক্ত করতো’
হাওড়ার বাউরিয়া জুট মিলে দুই শ্রমিকের মধ্যে মজা করতে গিয়ে প্রাণ গেল সাবের মল্লিক নামের এক শ্রমিকের। মৃত্যুকালীন তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। মৃত সাবের মল্লিকের বাড়ি বাউড়িয়া থানার চকমধু গ্রামে। পরিবারের লোকের অভিযোগ, সাবের একটু নরম প্রকৃতির মানুষ হওয়ায়, তাঁকে সহকর্মীরা নানাভাবে উত্যক্ত করত। তিনি ওই মিলের পাট ঘরে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে এই মিলে কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল ?
গতকাল ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১১ টা।টিফিন টাইমে যখন নিজের ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন ঠিক তখনই ওই মিলের অন্য এক শ্রমিক ব্লোয়ার যন্ত্র দিয়ে তার মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এতে তার পেট ফুলে গেলে ঘটনাস্থলেই সে লুটিয়ে পড়েন। এদিকে এই ঘটনার কথা জানতে পেরেই মিল কর্তৃপক্ষ , ওই শ্রমিককে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান পেটে অত্যধিক হাওয়া ঢুকে যাওয়ার ফলে নাড়ি ভুঁড়ি ফেটে গিয়েছে। এরপরে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মানিকতলায় ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই গতকাল সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় ওই শ্রমিকের।
মেয়ে মাধ্যমিক দিচ্ছে..
অপরদিকে এই ঘটনার পরেই গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মৃত সাবের মল্লিকের মেয়ে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাবার এমন মর্মান্তিক ঘটনার পরেও সোমবার সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে বলে জানা গিয়েছে। মৃতের পরিবার দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেছে। মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল থেকে গোটা ঘটনাটি মানিকতলা থানায় জানানো হলে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করেছে পুলিশ । যদিও এখনও পর্যন্ত বাউড়িয়া থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, মজা করতে গিয়ে ভয়াবহ ঘটনা এই প্রথমবার নয়। অতীতেও একাধিকবার এমন মর্মান্তিক পরিণতির মুখোমুখী হয়েছে রাজ্য। তবে এই ক্ষেত্রে প্রকৃতই ঠিক সেই সময় কী ঘটেছিল, কেন এমনটা করা হয়েছিল, তা তদন্ত রিপোর্টই বলবে।
আরও পড়ুন, বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড শুভেন্দু অধিকারী !
আরও দেখুন