কলকাতা: শুধু মাটি ধসে যাওয়াই নয়, আগামী দিনে ঘটতে পারে, আরও বড় দুর্ঘটনা। হাওড়া বেলগাছিয়া-কাণ্ডের (Howrah Disaster) পর আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের একাংশের মতে, এই বিপর্যয় ম্যান মেড। অপরিকল্পিতাভাবে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করায় এই দুর্ঘটনা। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
চার দিন ধরে জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, বাড়ির দেওয়ালে চওড়া হচ্ছে ফাটল। এরই মধ্যে ভেঙে পড়ল একটি বাড়ি। এদিকে এক বিপর্যয় কাটতে না কাটতে নতুন বিপর্যয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাধনকুমার ঘোষের নেতৃত্বে বেলগাছিয়া ভাগাড় এবং ধস-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যায় বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এয়ার অ্যান্ড ওয়াটার-এর বিশেষজ্ঞ দল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপর্যয় ম্যান মেড।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাধনকুমার ঘোষ বলেন, “ডাম্পিং গ্রাউন্ডের কোনও ফাউন্ডেশন তৈরি হয়নি, পরিকল্পিত ভাবে। যে জন্য এর নীচের যে মাটি সে এত ওজন ধরে রাখতে পারছে না, ফেটে যাচ্ছে। আপনি যদি এই পরিস্থিতিটা তৈরি না করতেন, তাহলে তো আগুনটা জ্বলত না।এইখানে আমি ডাম্পিং করব, এইখানে যত খুশি তত ওপরে উঠুক, কারও কোনও দেখার নেই, কেউ কিছু করবে না। সেই জন্য ম্যান মেড এটা।” ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এয়ার অ্যান্ড ওয়াটার বিশেষজ্ঞ এস কে রায়ের মতে, “এটা ভেতরে মিথেন গ্যাস জমা পয়েছে। যখনই সে একটুখানি অক্সিজেনের পাচ্ছে নিজে থেকে জ্বলে উঠছে। এটা একমাত্র বৃষ্টি হলে পরে নিভতে পারে, যদি ভেতরে জল যায়।”
কেউ রাজ্যপালের দোষ দিচ্ছে, কেউ সরকারের দোষ দিচ্ছে। স্থায়ীভাবে যদি একজন কাউন্সিলর হত, তাহলে আমাদের এখানে এই ঘটনা ঘটত না। এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। অন্যদিকে, এদিন ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া পুরসভার কমিশনার বন্দনা পোখরিওয়াল। ওই সময় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। অপরিকল্পিতভাবে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির অভিযোগের পাশাপাশি, বিপর্যয়ের নেপথ্যে উঠে আসছে হাওড়া পুরসভায় দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ার প্রসঙ্গ। এক বাসিন্দা বলেন, “ভোটের সময় তো ভোট নিয়ে নেবে। ভোট দাও, ভোট দাও। ভোটের জন্য তো ভোট নিয়ে গেছে, ৫ দিন ধরে আমরা এরকম ভুগছি।”
আরও দেখুন