কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মৃত্যুকুম্ভ মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যার আঁচ পড়েছে জাতীয় স্তরেও। এই আবহে এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
মহাকুম্ভে বিপর্যয় এবং পুণ্য়ার্থীদের মৃত্য়ু নিয়ে, সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। মঙ্গলবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে, কুম্ভে অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি মহাকুম্ভকে সম্মান করি। আমি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু পরিকল্পনা না করে, এত হাইপ তুলে, এত লোকের মৃত্য়ু। বললেন ৩০ জন। কথাটা কি সঠিক? কত মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়েছেন নদীতে? কত? হাজার-হাজার। আটবার আগুন লেগেছে। মৃতদেহের ওপর দিয়ে যাঁরা এই হাইপ তুলছেন, আর টাকা কামানোর জন্য় ধর্মকে বিক্রি করছেন, তাঁদের আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না।” এপ্রসঙ্গে এদিন রাজ্যপাল বলেন, “আমি বিতর্কে জড়াতে চাইনি। একটি গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয়, একজন মুখ্যমন্ত্রী যে রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী, তার উপর ভিত্তি করে তিনি যে কোনও রকম পরিস্থিতির পর্যালোচনার অধিকারী। আমি সেটাকে স্বাগত জানাই। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। একজন ধার্মিক মানুষ হিসেবে, কুম্ভমেলাকে ভারতের মহান ঐতিহ্য বলে মনে করি। আমি মনে করি এই কুম্ভ মেলা ‘মুক্তি মেলা’। এই কুম্ভ মেলা ‘মৃত্যুঞ্জয় মেলা’।”
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য রাজ্য তো বটেই জাতীয় স্তরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এবিষয়ে গতকাল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “সনাতনের আয়োজনকে ওদের ফালতু মনে হয়। আর এদের এক সহযোগী এর চেয়ে আরও ২ পা এগিয়ে বলেন যে মহামকুম্ভ মৃত্যুকুম্ভে পরিণত হয়েছে। এটা কী! এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস, আরজেডি ও তৃণমূলের নেতারা সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় আয়োজন নিয়ে করছেন। আস্থাকে সম্মান দিয়ে আয়োজন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কি অপরাধ? যদি সেটা অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের সরকার সেই অপরাধ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।” কুম্ভ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের সমালোচনায় সরব মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং মোদি সরকারের মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও। তিনি বলেন, “সনাতনীদের অপমান করা ওঁর স্বভাব হয়ে গেছে। ভারতীয় সংস্কৃতিতে আজ নয়, হাজার হাজার বছর ধরে সনাতন ধর্ম গঙ্গার স্রোতের মতো বহমান। যাঁরা সনাতনী সংস্কৃতির দিকে আঙুল তোলেন, তাঁরা নিজেদেরই ক্ষতি করবেন। মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভাবনায় আঘাত করা অপরাধ।”
আরও পড়ুন: RG Kar News: চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলায় CBI তদন্তের অগ্রগতি কতটা? রিপোর্ট তলব আদালতের
আরও দেখুন