কলকাতা: জি বাংলার (Zee Bangla) জনপ্রিয় গানের অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা পা’ (Sa Re Ga Ma Pa)। সেখানে সম্প্রতি এক পর্বে হাজির হয়েছিলেন জনপ্রিয় নাট্যশিল্পী গৌতম হালদার (Goutam Halder)। সেখানেই মঞ্চে তিনি গেয়ে শোনান জয় গোস্বামীর (Joy Goswami) লেখা ‘বেণীমাধব’ কবিতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করা হয়েছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু তাতেই কটাক্ষের বন্যা। (Social Media Trolls)
গৌতম হালদারের কণ্ঠে ‘বেণীমাধব’, কটাক্ষের বন্যা নেটপাড়ায়
গতকাল বিকেল চারটে নাগাদ জি বাংলার ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে গৌতম হালদারের কণ্ঠে ‘বেণীমাধব’। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘সঙ্গীতের সেরা মঞ্চে গৌতম হালদারের অনবদ্য উপস্থাপনা’। এখনও পর্যন্ত ওই পোস্টে ৭৮ হাজার রিঅ্যাকশন, ৫ হাজার ৮০০-এর অধিক কমেন্ট ও ৩ মিলিয়ন শেয়ার। সোমবার এই ভিডিও পোস্ট হতেই তা রীতিমতো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় কিন্তু যার অধিকাংশই বিরক্তির সহিত।
গৌতম হালদারের কণ্ঠে ‘বেণীমাধব’ মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করেননি নেটিজেনদের সিংহভাগ। চ্যানেলের পোস্টে কেউ লিখলেন, ‘মোটেই ভাল লাগেনি। এর থেকে লোপামুদ্রা মিত্রের গানটি চোখ বন্ধ করে শোনা অনেক ভাল। আপনি বড় মাপের শিল্পী কিন্তু দয়া করে এভাবে আর আবৃত্তি বা গান করবেন না। অসুস্থ বোধ হয় আমাদের। একজন স্কুলে পড়া মেয়ে এভাবে কদাকার অভিব্যক্তি করে নিজেকে প্রকাশ করে কিনা জানি না…’আমার বাবা দোকানে কাজ করে’ কথাটা এভাবে কেন বলতে হয় আপনাকে… জানি না। কে জানে, আপনার আমার সমাজ, চেতনা, ভালবাসা, প্রেম… সবটা বোধ হয় আলাদা, এক্কেবারে ভিন্ন।’ আবার একজন লিখলেন, ‘একজন কবি লিখেছিলেন এমন একটি কবিতা, একজন প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী এই কবিতাটিতে সুরারোপ করে উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছেন, আর আপনি সেই সমস্ত শুভ প্রয়াসের শ্রাদ্ধ করলেন।’ অপর একজন লেখেন, ‘কার কেমন লাগল জানি না। আমার জঘন্য লাগল। সঙ্গে শরীরী ভাষা আরও কুৎসিত।’ অপর একজনের কটাক্ষ, ‘এই বিকৃত উচ্চারণ শুনে এবং অস্বস্তিকর অতিনাটুকেপনা দেখে কোথাও যেন আমরাই প্রাধান্য দিয়ে ফেলছি এই অসফল জঘন্য পরিবেশনাটিকে। একের পর এক… আর নেওয়া যাচ্ছে না, এবার থেকে এড়িয়ে যাব।’ এখানেই শেষ নয়। এর থেকে আরও কঠিন ও জঘন্য ভাষাতেও গৌতম হালদারের পরিবেশনার সমালোচনা করেছেন নেটিজেনরা।
আরও পড়ুন: Dev Look in ‘Tekka’: ঝাড়ু হাতে দেব! ‘মরিয়া’ ইকলাখ রূপে প্রকাশ্যে ‘টেক্কা’ ছবির পরবর্তী চরিত্রের লুক
যদিও গৌতম হালদারের পক্ষ নিয়ে কমেন্ট বক্সে নিজের মত প্রকাশ করেছেন অপর নাট্যকর্মী পলাশ অধিকারী। তিনি লেখেন, ‘টিভির মঞ্চে উনি নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন না ঠিকই। ওঁর ম্যানারিজমের সঙ্গে যাঁরা পরিচিত নন তাঁরা জানেন না, উনি বাংলা থিয়েটারের মঞ্চে বটবৃক্ষ, প্রবাদপ্রতিম, কিংবদন্তি হয়ে থেকে যাবেন। জানলে অবাক হবেন আপনাদের বহু পছন্দের অভিনেতা, যাঁরা মঞ্চ থেকে এসেছেন, তাঁদের উনি শিক্ষক, অনুপ্রেরণা। যাঁরা এখানে ওঁকে দেখে হাসাহাসি করছেন ওঁকে নিয়ে কটুকথা বলছেন অথচ, মঞ্চে ওঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘সোজন বাদিয়া’র ঘাট’, ‘মেফিস্টো’, ‘গোত্রহীন’, ‘ফেরিওয়ালার মৃত্যু’ ইত্যাদি থিয়েটার এবং ‘কাব্যে গানে’ (এই পারফরম্যান্স সেটারই অংশ) দেখেননি, এটুকু জানাতেই পারি যে, ওঁকে মঞ্চে এইসব প্রযোজনায় না দেখাটা, এই প্রজন্মের সত্যিকারের সংস্কৃতি রসিক বাঙালি হলে আপনাদের চরম দুর্ভাগ্য বলে জানবেন। আশা করি, যাঁরা প্রকৃতই চেনেন ওঁকে তারাও আমার সঙ্গে একমত হবেন। যাই হোক উনি সারা পৃথিবীর অনেকের কাছে এক বাঙালি হিসেবে বিরাট সম্মানীয়, বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে ওঁর নাম সোনা দিয়ে লেখা থাকবে। সুতরাং এমন একজন কিংবদন্তির, সব বাঙালির কাছ থেকে অনেকটা শ্রদ্ধা প্রাপ্য। একটু সহানুভূতি রাখবেন আশা করি। দুমদাম কাউকে অপমান করার আগে ওঁর উচ্চতাটা একবার যাচাই করবেন।’ যে ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে সেখানে বিচারকের আসনে বসা শান্তনু মৈত্র, অন্তরা মিত্র বা ইমন চক্রবর্তীকেও মুগ্ধ হয়ে গৌতম হালদারের পারফর্ম্যান্স উপভোগ করতে দেখা গিয়েছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন