
সরস্বতী পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে গোটা সেদ্ধ। যা পুজোর পরের দিন শীতল ষষ্ঠীতে খাওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই দিন বাড়িতে রান্না হয় না। আগের দিনের করা রান্না শীতল ষষ্ঠীতে খেতে হয়। যা গরম করে নয়, খেতে হয় ঠান্ডা।

শীতল ষষ্ঠীর নিয়ম অনুযায়ী, এইদিন খেতে হয় গোটা সেদ্ধ ও পান্তা ভাত। গরম খাবার খাওয়া যায় না।সাধারণত পশ্চিমবঙ্গবাসী বা এদেশীয়দের এই রীতি চালু আছে। শীতল ষষ্ঠীতে শিলনোড়ারও পুজো করা হয়ে থাকে অনেক জায়গায়।

গোটা সেদ্ধতে কোনও সবজি খোলা-ছাড়ানো বা কেটে রান্না হয় না। তেল-ঝাল-মশলা নয়, হালকাভাবে রান্না করা উপকরণ। সবজির মধ্যে থাকে আলু, রাঙালু, বেগুন, শিষ পালং শাক, শিম, মটরশুঁটি, সবুজ মুগ কড়াই। মশলা হিসেবে ব্যবহার হয় আদা বাটা, হলুদ গুঁড়ো , লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে, পাঁচ ফোঁড়ন, শুকনো লঙ্কা, নুন, চিনি।

গোটা সেদ্ধ খেলে শরীরের উপকার হয়। একাধিক সবজি এবং এর খাবার ধরনের জন্য স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। কেন খাবেন গোটা সেদ্ধ? জানালেন পুষ্টিবিদ রাখী চট্টোপাধ্যায়।

শীতের শেষ মানেই ঋতু পরিবর্তন। আবহাওয়া মনোরম হোক বা না হোক, আশঙ্কা থাকে রোগভোগের। রাখী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা খাওয়া হয় ঠান্ডা অবস্থায়। ফলে শরীর ঠান্ডা থাকে। যার জন্য বিভিন্ন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।’’

শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। গোটা সেদ্ধতে ব্যবহার করা হয় ঋতুকালীন সবজি। যা বাজারে সহজেই পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, এই ধরনের সবজিতে পুষ্টিগুণ সবসময় বেশি হয়।

ফাইবার তো বটেই, গোটা সেদ্ধ থেকে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবুজ মুগ থাকায় ভাল মানের উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও মেলে। যেহেতু সেদ্ধ করে রান্না করা হয় তাই ক্যালোরির পরিমাণ থাকে একেবারেই কম।

যাঁরা ওবেসিটির সমস্যায় ভোগেন বা ডায়বেটিক, তাঁদের এই রীতি নিয়ে কোনও আশঙ্কা নেই বলেই পরামর্শ দিচ্ছেন রাখী। তিনি জানাচ্ছেন, “এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স একেবারেই কম। সেদ্ধ করার জন্য যে স্টার্চ (রেজিস্ট্যান্স স্টার্চ) তৈরি হচ্ছে তা শরীরের ক্ষতি করে না। সেদ্ধ করার জন্য পুষ্টিগুণ থাকে ভরপুর।’’

এই সময়ে ঋতুকালীন বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। যা প্রতিহত করতে সুস্থ থাকা প্রয়োজন। ফোঁড়নের জন্য যে গোটা মশলা ব্যবহার করা হয় তা রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাঁরা গোটা সেদ্ধ এড়িয়ে চলাই ভাল।

গোটা সেদ্ধর সঙ্গে পান্তা ভাতও খাওয়া হয়। পুষ্টিবিদ রাখী চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, “পান্তা ভাত পেট ঠান্ডা রাখে। পাশাপাশি ওবেসিটি, ডায়বেটিকদের জন্য উপকারী। কারণ আগের ভাতে জল দিয়ে রাখায় যে স্টার্চটা তৈরি হয় সেটা শরীরের ক্ষতি করে না। এটার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। এতে খনিজ পদার্থ তৈরি হয়। এতে অ্য়ান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। জল থাকায় হাইড্রেট রাখতে পারে।’’
Published at : 02 Feb 2025 02:11 PM (IST)
আরও জানুন জেলার
আরও দেখুন