জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজনৈতিকভাবে ভারতকে চাপে রাখতে চাইছে বদলের বাংলাদেশ। তার জন্য ইউসুনের অন্তর্বর্তী সরকার হাত মেলাতে চলেছে চিনের সঙ্গে। অস্ত্র ‘তিস্তা নদী’। বাংলাদেশের কাছে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই তিস্তা নদী? তিস্তা ভারতের একটি বৃহৎ অংশজুড়ে বহমান। পাশাপাশি বাংলাদেশের উপর দিয়েও গিয়েছে। আর এই নদী ঘিরেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে তিস্তা প্রোজেক্ট। যদিও জলের আদান-প্রদান ঘিরে নানান সমস্যা দুই দেশের বহুকাল ধরেই রয়েছে। তারপরেও শেখ হাসিনার সরকার এই প্রোজেক্টের থেকে চিনকে দূরে করে রেখেছিল।
আরও পড়ুন: বিএনপি, জামাত কি একঘরে! হাসিনা ও ভারতবিরোধী ছাত্রদের নতুন পার্টির স্লোগান, ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’…
সেই তিস্তা কেই সামনে রেখে বাংলাদেশে তিস্তা পাড়ের ৫ জেলার ১৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ শীর্ষক ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুরে রংপুর জেলার তিস্তা রেলওয়ে সংলগ্ন চরে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানেই স্লোগান উঠল ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাও’।
বিএনপির মহাসচিব তিনি এদিন বলেন, ‘আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবেই দেখতে চাই। কিন্তু ন্যায্য জলের ন্যায্য হিসাব বুঝিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাইলে আগে তিস্তার জল দেন।’ লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি জায়গায় সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।’ টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি চলবে।
প্রতিটি পয়েন্টেই রয়েছে বিএনপির নেতৃত্বরা। উপস্থিত মানুষদের উদ্দেশ্যে করে মির্জা ফখরুল বলেন, লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না, লড়াই করে আমাদের গুলো অধিকার আদায় করবো, ন্যায্য পাওনা বুঝে নেবো। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদেরকে নিরপেক্ষ সরকার, তাই ভারতের কাছে তিস্তার জল চাইতে হবেই। তার জন্য দ্রুত সংস্কারের কাজ থেকে শুরু অন্যান্য কাজ করতে হবে। তাঁদের আরও দাবি, দ্রুত সম্ভব এখানে ভোট হোক কারণ এই সমস্ত দাবিগুলি বাস্তবায়ন করাতে দরকার সরকারের। সবশেষে বিএনপির মহাসচিব তিনি বলেন, এটি একটি নতুন লড়াই শুরু হয়েছে। যা বাংলাদেশের বাঁচার লড়াই।
আরও পড়ুন: ‘বাবা, এটাই তোমাদের সঙ্গে শেষ কথা! আর দেখাও হবে না’, ফোনের ওপারে কান্নায় ভেঙে পড়লেন…
বিএনপি এর আগে ২০১৪ সালে ঢাকা থেকে তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ করেছিল। ওই বছরের ২২ এপ্রিল দলটির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতৃত্বে রাজধানীর উত্তরা থেকে লংমার্চের গাড়িবহরের যাত্রা শুরু হয়। যাওয়ার পথে গাজীপুরের কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইল বাইপাস মোড়, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২২ এপ্রিল রাতে রংপুরে যাত্রাবিরতি থাকে। পরদিন ২৩ এপ্রিল রংপুরে সমাবেশের পর নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চ যাত্রা শুরু করে। ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারেজের কাছে সমাবেশের মধ্য দিয়ে দুই দিনের সেই কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। যদিও এই প্ল্যান যদি কার্যকরী হয় তাহলে একপ্রকার ভারতের উপর বৈদেশিক চাপ সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ এবং চিন। সেইমত পরিস্থিতিতে ভারতের কী ভূমিকা থাকবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)