Operation Sindoor: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সাধারণত লোকচক্ষুর আড়ালে থাকে। তবে কাশ্মীরকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মধ্যে এখন তাকেই শয়তানের মাথা হিসেবে দেখা হয়।
কিছুদিন আগেও পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই ব্যক্তি পর্দার আড়ালেই থাকতে পছন্দ করতেন। তিনি জনসমক্ষে নিজের ভাবমূর্তি কঠোরভাবে বজায় রাখার চেষ্টা করতেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁর বক্তব্যগুলো দেশের সামগ্রিক অবস্থা নিয়েই হয়।
অসম্ভব প্ররোচনামূলক ও ভারত বিদ্বেষী বক্তব্য রাখার জন্য তিনি যথেষ্ট নিন্দনীয়।
আরও পড়ুন: India Pakistan War: শুধু মাসুদ আজহার নয়, ছিন্নভিন্ন লশকর-প্রধান হাফিজ সঈদও! ভারতের প্রত্যাঘাতে উড়ে গেছে ছেলে ‘জঙ্গি’ তালহা…
তবে প্রায় দু’সপ্তাহ আগে কাশ্মীরে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর আসিম মুনির পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় কঠোর জবাব দিতে ভারত মঙ্গলবার মাঝরাতে পাকস্তানে আকাশহানায় ৯টি জঙ্গি-ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এই যুদ্ধের আগে সামরিক মহড়া চলাকালীন ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে সেনাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন জেনারেল মুনির। সেখানে নির্লজ্জভাবে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে উজ্জীবিত করেছেন।
এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারতের যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাল্টা জবাবটা হবে সমানে সমান বা আরও বেশি মাত্রায়।
পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে চলা রাজনৈতিক বিভাজন ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত। এমনকি এসব সংকটের কারণে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রতি দেশটির জনগণের অটুট আনুগত্যে চিড় ধরেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বহুদিন ধরেই পর্দার আড়ালে থেকে দেশটির রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
আরও পড়ুন: India Pakistan War: ‘যা, মোদীকে গিয়ে বল! ওরা বলেছিল আমার স্বামীকে মারার সময়, মোদীজি শুনেছেন…’
তবে জেনারেল মুনিরের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়াকে কেবলই একটি রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে হচ্ছে না, এর চেয়ে বেশি কিছু এখানে আছে। বিশ্লেষকদের মতে, তিনি ভারতের বিষোদগার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। পাকিস্তানের দুই শীর্ষ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি যে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন, তা ছিল অত্যন্ত নিন্দাজনক।
ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরকে আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করলেও দুই দেশই এই অঞ্চলকে পুরোপুরিভাবে নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
আসিম মুনিরের কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্যকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক উসকানিমূলক বলে নিন্দা জানিয়েছে।
তবে এবার জেনারেল মুনির এই ‘কাশ্মীর ভারতের প্রাণকেন্দ্র’ তত্ত্বকে যেভাবে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছেন এবং আরও যেসব আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন, তার মধ্যে পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট।
জেনারেল মুনিরের বক্তৃতার পরপরই পহেলগাঁও নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভারত যদি এর মধ্যে স্পষ্ট সংযোগ দেখছে। বিশেষ করে তিনি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যে শত্রুতার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা বহুদিন ধরে কোনো পাকিস্তানি বেসামরিক বা সামরিক নেতা করেননি।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জেনারেল মুনিরের বক্তব্যের সঙ্গে কাশ্মীরের হামলার কোনো সম্পর্ক থাকার দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম আহমেদ ভারতের এই অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের বিষয়টি অমীমাংসিত থাকাটাই দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিরতার মূল কারণ হিসেবে থেকে গেছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিভক্তির পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান বৈরিতার কেন্দ্রবিন্দুতে এ অঞ্চলের অবস্থান। কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ, সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং দীর্ঘ মেয়াদে সেনা মোতায়েনের ঘটনা ঘটেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)