গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সামনেই বর্ষা, তার আগে নিম্নচাপ। আর তাতেই শঙ্কা বাড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায়। নিম্নচাপের জেরে রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (Gangasagar Dam Collapse)। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। এরইমধ্যে গঙ্গাসাগরে প্রায় ১০০ মিটার নদী বাঁধে ধস নেমেছে।
গঙ্গাসাগরে নদী বাঁধে ধস: বঙ্গোপসাগরের সুস্পষ্ট নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে আজই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা। এর মধ্যেই গঙ্গাসাগরের বেগুয়াখালি ও মহিষামারি এলাকায় প্রায় ১০০ মিটার নদী বাঁধে ধস নেমেছে। আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। কোথাও কোথাও আবার নদীবাঁধ উপচে জল ঢুকছে। গতকাল রাতে মহিষামারি ও বেগুয়াখালি এলাকায় নদী বাঁধে ধস নামায় গঙ্গাসাগর কোস্টাল থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ। পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছে প্রশাসন।
বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তরমুখী নিম্নচাপ এগোচ্ছে স্থলভাগের দিকে। কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের ৯টি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠছে সমুদ্র। বাঁধ উপচে জল ঢুকছে লোকালয়ে। দুর্যোগের ভ্রুকুটিতে আশঙ্কিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে মাইকে প্রচার। অমাবস্যার কটালের প্রভাবে সুন্দরবনের নদী ও সমুদ্রে জলস্তর বেড়েছে। শুধু গঙ্গাসাগরেই বিপত্তি নয়, ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের মৌসুনি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, কুলতলির বেশ কিছু বেহাল বাঁধ দিয়ে নোনা জল লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে। মাটির বাঁধগুলির অবস্থাও ভাল নয়। জলোচ্ছ্বাসের জেরে যে কোনও সময় বড়সড় ধস নামতে পারে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। জেলা, মহকুমা ও ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা মোতায়েন রয়েছেন। শুকনো খাবার, জলের পাউচ মজুত করা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন, উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। সেই কারণে সমস্ত এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য জানানো হচ্ছে। এবং মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। আগত পর্যটকদের বলা হচ্ছে, সমুদ্র উত্তাল থাকলে আপনারা কেউ সমুদ্রে স্নান করতে নামবেন না।
আরও দেখুন