কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজে স্য়ালাইনকাণ্ডের দায় কার? সোমবার গাফিলতি স্বীকার করে, মুখ্য়সচিবের মুখে শোনা গেছে ট্রেনি চিকিৎসকদের কথা। যার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী সোশাল মিডিয়ায় মুখ্য়সচিবকে উদ্দেশ্য় করে লিখেছেন, আপনাদের পরিকল্পনা হল, জুনিয়র এবং ট্রেনি চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তোলা। সাংবাদিক বৈঠকে ‘গাফিলতি’ শব্দটা একাধিকবার বলা, তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সন্তান প্রসবের পরই, মৃত্য়ুর কোলে ঢলে পড়েছেন এক প্রসূতি। তিনজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে। তার মধ্য়ে দু’জন ভেন্টিলেশনে। পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়ালের তৈরি রিঙ্গার ল্য়াকটেট ব্য়বহারের ফলেই এই পরিণতি বলে অভিযোগ। এই প্রেক্ষাপটে আবার রোগীর পরিবারের থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু, এতগুলো মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলল কারা? কারা এই ঘটনার জন্য় দায়ী? এই প্রশ্ন যখন উঠছে, গাফিলতির কথা মেনে নিয়েছেন মুখ্য়সচিবও। তাঁর মুখে শোনা গেছে পোস্ট গ্র্য়াজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকদের প্রসঙ্গ।
মুখ্য়সচিব বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, গুরুতর গাফিলতি রয়েছে ইউনিটের, যাঁরা তখন ডিউটিতে ছিলেন। তা সত্ত্বেও, আমরা আরও বিশদ তদন্ত করার জন্য়, নির্দেশ দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে যেটা হয়, সবসময় একজন সিনিয়র ডাক্তারের উপস্থিতিতেই এটা করা হয়। কিন্তু, ওখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ট্রেনি চিকিৎসক, ওরাই এটা সামলেছেন। সেজন্য় আমরা মনে করি, এটা স্ট্য়ান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর এবং গাইডলাইন অনুযায়ী হয়নি।
এরপরই শুভেন্দু অধিকারী সোশাল মিডিয়ায় লেখেন,মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ, মনে হচ্ছে, আপনি এবং স্বাস্থ্য়সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম চাইছেন, মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজের ঘটনার পুরো দায় স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিষয়ক বিভাগের দিকে ঠেলে দিতে। আপনাদের পরিকল্পনা হল, জুনিয়র এবং ট্রেনি চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তোলা।সাংবাদিক বৈঠকে ‘গাফিলতি’ শব্দটা একাধিকবার বলা, তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিতর্কের আবহে, সোমবারই মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়।স্বাস্থ্য় দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, PGT-রা একা সার্জিক্য়াল বা অ্য়ানেস্থেটিক প্রসিডিওর করতে পারবেন না। সমস্ত বিভাগের শিক্ষকদের জানানো হচ্ছে, সমস্ত সার্জিক্য়াল প্রসিডিওর করবেন শিক্ষক বা বেড ইনচার্জ এবং MD বা MS ডিগ্রিধারীরা। PGT বা জুনিয়ররা একা অপারেশন করবেন না। করলে তা শাস্তিযোগ্য় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।
স্য়ালাইনকাণ্ডে এদিন মুখ্য়সচিবকে কার্যত চ্য়ালেঞ্জ ছুড়েছে বিরোধী দলনেতা। তিনি সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ৭ জানুয়ারির আগে, রাজ্য় সরকারি হাসপাতালগুলির উদ্দেশে জারি করা, কোনও চিঠি বা মেমো দেখান, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়ালের রিঙ্গার ল্য়াকটেটের ত্রুটিপূর্ণ ব্য়াচের ব্য়বহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। দয়া করে সময়-সহ ইমলের কপি দিন।’
শুভেন্দু অধিকারী আরও লিখেছেন, ২০২৪-এর ১৩ ডিসেম্বর থেকে আপনারা কী করছিলেন, যখন কর্ণাটকে বিষাক্ত স্য়ালাইনে চারজনের মৃত্য়ুর পর, সেরাজ্য়ের স্বাস্থ্য় দফতর আপনাদের সতর্ক করেছিল?’ এটা আপনাদের স্বাস্থ্য়সচিব এবং স্বাস্থ্য়মন্ত্রীর ভুল। তাঁদের গাফিলতি। CID-র উচিত, তাঁদের গ্রেফতার করে ভবানী ভবনে নিয়ে যাওয়া। মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ বলেন, ‘কাদের কী যোগ আছে, কারা কীভাবে এই কাজের সঙ্গে, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কী গাফিলতি আছে, কতটা গাফিলতি আছে, এটা বিশদ তদন্তে জানা যাবে।’ শেষ অবধি কি তদন্তে সত্য়িটা উঠে আসবে?
আরও পড়ুন, পুণ্য শাহি স্নানের আগে সেজে উঠেছে মহাকুম্ভ, চোখ জুড়িয়ে যাবে এছবি দেখলে..
আরও দেখুন