স্বরূপ দত্ত
রজত অরোরা। বছর কয়েক আগে একটি সংলাপ লিখেছিলেন। বড় ভালো লেগেছিল। আমার একার নয়। তাই তো চলেছিল দেশজুড়ে। ফিল্ম হিট হয় কীসের জন্য? এন্টারটেইনমেন্ট। এন্টারটেইনমেন্ট। এন্টারেটেইনমেন্ট। একদম। শুধু ফিল্ম কেন, জীবনের সবকিছু ভালোলাগার সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট এবং এন্টারটেইনমেন্ট। যেখান থেকে বিনোদন পাবো, সেখানেই না মন দেবো! তা আজকের তারিখ হল ৩০ অক্টোবর। এই দিনটাকেই এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট এবং এন্টারটেইনমেন্ট ডে বা দিবস বলা যায় দিব্যি। সোজা বাংলায় বিনোদন দিবস। কেন বলছি এরকম কথা? আজকের দিনে অনেক অনেক বিখ্যাত মানুষের জন্ম হয়েছে। আজকের দিনেই পৃথিবীজুড়ে নানা স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে নানা বছরে। কিন্তু আজকের দিনে মানে ৩০ অক্টোবর জন্মানো তিনজন ‘স্পেশাল’ মানুষের কথা বলতে চাই আজ। যার জন্যই মনে হবে, ৩০ অক্টোবর না থাকলে, আমাদের আর এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট পাওয়ার কাহানিই থাকতো না হয়তো! তাহলে এক এক করে নামগুলো বলি।
সুকুমার রায় – এই তিনে সবার আগে তাঁর নাম। কারণ, অনেক হতে পারে। আমার ভাবনায়, তিনি বাঙালি। তাঁর জন্যই প্রথম হাসতে শিছেছি। তাঁর জন্যই প্রথম কল্পনাশক্তির বিকাশ হয়েছে। একটা মানুষকে আট টুকরো করে আহ্লাদে আটখানা বোঝানো যদি ছেলেবেলায় না দেখতাম, জানি না কী তৈরি হতাম! আর খুড়োর কলের ওই ‘কনসেপ্ট’ বা ‘আইডিয়া’ আজকের মোবাইল কোম্পানি পেলে কী বলতো কে জানে! সুকুমার রায়ের থেকে ভালো এন্টারটেইনার কেই বা আছে! বিষয়টা যদি বই আর লেখক হয়! তাহলে হয়ে গেল প্রথম এন্টারটেইনমেন্ট।
দিয়েগো মারাদোনা – দ্বিতীয় নাম। বাঙালি মানে বই বলেই তো প্রথমে সুকুমার রায়। বাঙালি মানে তেমনই যে ফুটবল। ফুটবল আর মারাদোনা তো সমার্থক শব্দই। মারাদোনা ছাড়া ফুটবল তো মার ছাড়া সুতির পাঞ্জাবী! তাঁরও জন্মদিন আজ অর্থাত্, ৩০ অক্টোবর। মারাদোনার থেকে বড় এন্টারটেইনার আর বিশ্বফুটবলে কে কবে ছিল! লোকটার পায়ে জাদু। লোকটার হাতে জাদু। লোকটার মুখে জাদু। লোকটার চরিত্রেই জাদু। কখনও হেসেছেন। হাসিয়েছেন। কখনও জিতেছেন। জিতিয়েছেন। কখনও কেঁদেছেন। কাঁদিয়েছেন। আর কখনও মনে করিয়েছেন, আমি মারাদোনা নই, তুমি বা তোমরাই তো মারাদোনা। ইতালিতে বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনার প্রধানমন্ত্রী ইতালিতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছেন মারাদোনাদের বিশ্বকাপের জন্য। মারাদোনা দেখা-টেখা করে সাংবাদিকদের বলে দিলেন, ‘লোকটা আমার সঙ্গে ছবি তুলতে এসেছে’! এন্টারটেইনমেন্ট আর মারাদোনাও যে সমার্থক শব্দ। হয়ে গেল দ্বিতীয় এন্টারটেইনমেন্ট।
কোর্টনি ওয়ালশ – বাঙালি মানে বই। বাঙালি মানে ফুটবল। আর বাঙালি মানে ক্রিকেট নয়? বাঙালি যে বড় ক্রিকেটরসিকও। আর ভারত ছাড়া বাঙালিরা চিরকাল যে দলটাকে সবথেকে বেশি সমর্থন করে এসেছে, সেই দলটাই তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে এত এত পেস ব্যাটারির নাম শুনেছি। পড়েছি। বল করতে দেখেছি। কিন্তু ওয়ালশ যে অন্তত উইকেট সংখ্যার বিচারে সবাইকে ছাপিয়ে চলে গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই গ্রহের প্রথম ৫০০ উইকেট পাওয়া বোলার। বল হাতে জাদু। আর ব্যাট হাতে? শূন্য রান করার রেকর্ড! লোকটা বলে বলে শূন্য করতেন! কী বলবেন এন্টারটেইনার না? সঙ্গে দুর্দান্ত জেন্টলম্যান। বিপক্ষ ব্যাটসম্যান ক্রিজ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বল করার আগেই। ওয়ালশ তাঁকে আউট না করে ছেড়ে দিয়েছেন! দেশে সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু নিজের ভদ্রতা, সৌজন্যতা জলে ফেলে দেননি। তাহলে পেয়ে গেলেন তো তৃতীয় এন্টারটেইনমেন্টকেও!
সব শেষে তাহলে কী দাঁড়ালো? ৩০ অক্টোবর মানে সুকুমার, মারাদোনা, ওয়ালশ, এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারেটইনমেন্ট। রজত অরোরা এবার আরও একটা বাস্তবের কাহানি লিখতে পারেন।
আরও পড়ুন দীপাবলির সেরা ১০ বাজির কোনটার সঙ্গে কোন বলিউড অ্যাক্টরের মিল আছে!
(এই লেখা একান্তই আমার মত। এর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা ডট কম যে একমত হবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই।)