NOW READING:
“আর নয় বাজি, চাই শিল্প” ধ্বংসের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে খাদিকুল
April 2, 2025

“আর নয় বাজি, চাই শিল্প” ধ্বংসের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে খাদিকুল

“আর নয় বাজি, চাই শিল্প” ধ্বংসের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে খাদিকুল
Listen to this article


বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ফের প্রাণ কাড়ল বাজি। পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাটের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে বছর দুই আগের এগরার ঘটনা। ২০২৩ সালে খাদিকুলে বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১১ জনের। আর বাজি নয়, শিল্প চায় খাদিকুল। এবিপি আনন্দর ক্যামেরায় ধরা পড়ল স্বজন হারানো মানুষের দাবির কথা। গ্রিন বাজির ক্লাস্টারের জন্য পাঁশকুড়ায় জমি চিহ্নিত হয়েছে। কিছুদেনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। জানিয়েছেন জেলাশাসক।

কেমন আছে খাদিকুল? 

বছর ২ আগের খাদিকুল এখনও সেই ধ্বংসের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে খাদিকুল। ২০২৩ সালের, ১৬ মে  এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তে মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে খাদিকুল গ্রাম। কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা যায় আওয়াজ। বিস্ফোরণে উড়ে যায় গোটা একটা বাড়ি। ভেঙে গেছে আশপাশের বাড়ির কাচ। মৃত্যু হয় মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ সহ ১১ জনের। নিহতের আত্মীয় পঙ্কজ বাগ বলেন, “আতসবাজি একদম না। আইনি হোক আর বেআইনি হোক। একদমই না।” ওই এলাকার এক বাসিন্দা অমল মাইতি বলেন, “শুনেছিলাম, এখামে বোম ফোম তৈরি হয়, ওই আতসবাজির সঙ্গে। আর কী তৈরি হয় জানা নেই।” ভানু বাগের ভাই, কালীপদ বাগ। ক্যামেরার সামনে বলতে চান না কিছু। তাঁর কথায়, “তমলুকে CID-র কাছে যান, জেলা সভাপতির কাছে যান, সবার কাছে যান। MLA-র কাছে, MP-র কাছে যান, আমরা কী করে খাই, ওরা জানে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরেই ওই ঘটনা ঘটে। কিন্তু, স্থানীয়দের একাংশ থেকে বিরোধী সকলেরই দাবি করেন, বাজি কারখানার আড়ালে বোমা বাধা হচ্ছিল। খাদিকুল গ্রামে যেখানে বিস্ফোরণ ঘটে, সেখান থেকে এগরা থানার দূরত্ব কমবেশি ২২ কিলোমিটার। এগরা দমকল কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। ঘটনাস্থল থেকে গোপীনাথপুরে মূল রাস্তার দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার। প্রশ্ন ওঠে সব জেনেও কি চুপ ছিল পুলিশ নেপথ্য়ে কি টাকার খেলা? কোনও প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি।

স্বজনকে হারিয়ে, বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে খাদিকুল চায়, এরকম যেন আর না ঘটে। খাদিকুল চায় কোনও কারখানা হোক এলাকায়। নাহলে ক্লাস্টার হোক বাজির। পঙ্কজ বাগ বলেন, “কোনও বেআইনি নয়, আইনের মধ্যে কোনও কারখানা হলে ভাল হত। আমরা গরিব মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ, বেকার বসে আছি, কিছু ইনকাম হত।” স্থানীয় বাসিন্দা অমল মাইতির কথায়, “সব কিছু বিধি নিষেধ মেলে যেটা, গ্রিন বাজি তৈরির কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটা হলে, এখানকার কিছু লোক উপকৃত হবে। সেটা বর্তমান অব্দি কিছু হয়নি।”

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে গ্রিন বাজির ক্লাস্টারের জন্য পাঁশকুড়ায় জমি চিহ্নিত হয়েছে। কিছুদেনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই জেলার ১৩০জন বাজি শিল্পীকে গ্রিন বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এবারও একই প্রকল্প চলবে। যাতে কোথও কোনও অবৈধ বাজি তৈরি বা বিক্রি না হয়, তার জন্য নজরদারি চলছে।

আরও দেখুন



Source link