জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত ৫ অগাস্ট ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার পর থেকেই দেখা গেল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে হামলা শুরু হয়ে যায়। হিন্দুদের ঘরবাড়ি, তাদের ধর্মস্থানের উপরেও হামলা হয়। এনিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশে। হামলার প্রতিবাদে শনিবার চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করেছে হিন্দুরা। তাদের বেশ কয়েকদফা দাবিও রেখেছেন। এনিয়ে মঙ্গলবার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নতুন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন-কে, কোথায় বিশ্রামে? রেইকি করেই ধর্ষণের ‘টার্গেট’ স্থির করে সঞ্জয়?
দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছে সরকার। এই বার্তা দিতেই মঙ্গলবার হিন্দু প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকে বলছেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ হোসেন। হিন্দুদের একগুচ্ছ দাবি রয়েছে। সেইসব দাবির কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে।
খালিদ হোসেন বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানাই। দুর্বৃত্তদের দ্বারা এই হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে সরকার। সরকার সব ধর্মের মতের সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। তিনি আরও বলেন, হামলাকারী দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। অসাম্প্রদায়িক দেশ সেটা বজায় রাখা হবে। আজ হটলাইন চালু হবে, যে কারও বাড়িতে হামলা হলে যেন জানায়। পুলিস সেখানে যাবে, ব্যবস্থা নেবে। ইমাম সাহেবরা মসজিদে মসজিদে বয়ান করে অমুসলিমদের ওপর হামলা না করতে, তাদের পাশে থাকার কথা বলেছেন। যাদের বাড়ি ঘর মন্দির ধ্বংস হয়েছে সে তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে। শুরু থেকেই মাদরাসার ছাত্ররা ও অন্যান্য ছাত্ররা মন্দির ও উপাসানালয়গুলোতে রাত জেগে পাহারা দিয়েছে। আমরা এ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চাই।
হিন্দুদের উপরে হামলার শনিবার প্রতিবাদের ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিশাল সমাবেশ করে বিক্ষোভ দেখায় হিন্দুরা। তাদের দাবি হাসিনার পতনের পর দেশের ৫২ জেলায় অন্তত ২০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকশো সংখ্যালঘু মানুষ আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি। আওয়ামি লিগের ২ নেতা যারা ধর্ম বিশ্বাসে হিন্দু তাদের খুন করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে দেশের বহু মন্দিরে। শনিবার ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনে নামে বহু হিন্দু সংগঠন। প্রায় তিন ঘণ্টা তারা রাস্তা অচল করে রাখেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সংসদে অন্তত ১০ শতাংশ আসন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে, সংখ্যালঘুদের উপরে হামলায় বিচারে একটি পৃথক ট্রাইবুন্যাল তৈরি করতে হবে। সংখ্যালঘু নিরাপত্তা আইন কার্যকর করতে হবে। এনিয়ে চট্টোগ্রামেও একটি বিশাল সমাবেশ করে সংখ্যালঘুরা। কমপক্ষে ৭ লাখ মানুষ ওই দুই বিক্ষোভে সামিল হন।
এনিয়ে কী বলেন মহম্মদ ইউনূস? বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ইউনূস সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনাকে অত্যন্ত নক্কারজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুরা কি দেশের মানুষ নন? গোটা দেশটাকে আপনারা বাঁচাতে পারলেন, আর আপনারা কয়েকটা পরিবারকে বাঁচাতে পারবেন না? ওরা আমাদের ভাই। আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি। আমরা একসঙ্গেই থাকব।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)