জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আর ‘বিলুপ্ত’ নয়! কেননা, তারা এবার ফিরে এসেছে! ‘ওয়ার্ল্ডস ফার্স্ট ডি-এক্সটিংকশন’ (world’s first de-extinction)! পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হওয়ার ১২,৫০০ বছরেরও বেশি সময় পরে ভয়ংকর এই নেকড়েরা আবার হাঁটছে, চিৎকার করছে এই গ্রহের মাটিতেই! আশ্চর্য! কীভাবে? বিজ্ঞানের কল্পকাহিনি নয়। ঘোর বাস্তব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম– ‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেস’ (Colossal Biosciences)। তারাই বিজ্ঞানের দুনিয়ায় সম্প্রতি এই বিপ্লব ঘটাল।
‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেস’ বলছে– ‘রোমুলাস এবং রেমাসের সঙ্গে দেখা করুন– বিশ্বের প্রথম বিলুপ্ত প্রাণী, যাদের জন্ম ১ অক্টোবর, ২০২৪ সালে।’ না, খবরটি একবছরের পুরনো হলেও, সম্প্রতি খবরটির শিরানামে উঠে আসার কারণ, আগের দুটি পুরুষের পরে খালেসি নামে একটি স্ত্রী-নেকড়েও জন্মেছে, এই ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে। রোমুলাস, রেমাস এবং খালেসি (Romulus Remus and Khaleesi) হল সেই তিনি নেকড়ে শাবক।
বলা হয়, ভয়ংকর এই নেকড়েরা বরফযুগে উত্তর আমেরিকায় রাজত্ব করত। ম্যামথ, বাইসন এবং বিশাল স্থল স্লথ শিকার করত এরা। আজকের ধূসর নেকড়ের চেয়েও আকারে বড় এবং বেশি শক্তিশালী। এদের শক্তিশালী চোয়াল এবং প্রশস্ত খুলি এদের ভয়ংকর এবং শীর্ষ শিকারি করে তুলেছিল।
‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেসে’র বিজ্ঞানী-গবেষকেরা জীবাশ্মের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে শুরু করেছিলেন তাঁদের যুগান্তকারী এই কাজটি। ১৩,০০০ বছরের পুরনো একটি দাঁত এবং ৭২,০০০ বছরের পুরনো একটি হাড়, যেটি কানের ভেতরের হাড়– তাদের এই কাজের মুখ্য উপাদান ছিল। তারপর উন্নত প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহার করে জটিল ডিএনএ-সংক্রান্ত হিসাবনিকাশ সম্পন্ন করে তাঁরা অভূতপূর্ব নির্ভুলতার সঙ্গে এই নেকড়েদের জিনোম পুনর্গঠন করেছিলেন। পরে সেগুলি থেকেই ক্রমে জন্ম সম্ভব হয় নেকড়েছানাদের। কলোসাল-এর সিইও বেন ল্যাম বলেছেন, ‘আমাদের দলটি ১৩ হাজার বছরের পুরনো একটি দাঁত এবং ৭২ হাজার বছরের পুরনো একটি খুলির জীবাশ্ম থেকে ডিএনএ (DNA) নিয়েছিল এবং পরে বাকি বায়োলজিক্যাল প্রসেসগুলি সম্পাদন করেছিল।’ এরই ফলস্বরূপ ভয়ংকর এই নেকড়ে প্রজাতির তিন শাবক জন্ম নেয়। যাদের অবশ্য কুকুরছানাই বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Bengali New Year Rashifal: নববর্ষে লক্ষ্মীলাভ! নতুন বাংলা বছরে কোন কোন রাশির মাথায় ঝরে পড়বে রাশি-রাশি টাকা, খুলে যাবে কপাল…
আরও পড়ুন: Student Gangraped by 23: উনিশের তরুণীকে ৭ দিন ধরে লাগাতার ধর্ষণ ২৩ বর্বরের! যৌনতার আগে পানীয়তে…
জানা যাচ্ছে, এটা তাদের শুরু মাত্র। এরপর এভাবে ‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেসে’ পৃথিবীর বুকে অনেক কিছুই এবার ফিরিয়ে আনবে। এক্ষেত্রে তারা একটা মাইলফলক গাঁথবে বিজ্ঞানের ইতিহাসে। ‘ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড শর্ট প্যালিন্ড্রমিক রিপিটস’ (clustered regularly interspaced short palindromic repeats/ CRISPR) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা এবার হারিয়ে যাওয়া সব প্রজাতির প্রাণীদের বিলুপ্তি থেকে ক্রমশ ফিরিয়ে আনবে!
আচ্ছা, এমন যদি ঘটতে থাকে, তবে তো এই গ্রহে একদিন ভয়াবহ ভয়ংকর হাড়হিম-করা সব ডাইনোসরেরাও ঘুরে বেড়াবে? দাপিয়ে বেড়াবে আপনার-আমার ঘরের কাছের অরণ্যে? আপনার-আমার গ্রাম-শহরের নিকটবর্তী নদীতীরে? আজ থেকে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে ক্রিটেশিয়াস যুগে হারিয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরেরা! যদি তারা এভাবে ফেরে? ল্যাবরেটরির চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে আসে প্রাকৃতির কোলে? কী হবে তখন?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)