কলকাতা: বিয়ের পর একমাসও পেরোয়নি এখনও। তার মধ্যেই তাঁদের জীবনে গভীর শোক নেমে এসেছে। বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার এখন পুত্রশোকে কাতর। নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলে প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয় দাশগুপ্তর নিথর দেহ উদ্ধার হয় গতকাল। সেই নিয়ে এবার এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন প্রীতমের বাবা, রিঙ্কুর আগের পক্ষের স্বামী রাজা দাশগুপ্ত। ছেলে মায়ের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি বলেই দাবি তাঁর। (Rinku Majumdar)
বুধবার এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে রাজা বলেন, “আসলে আমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ছেলে মায়ের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। মা বিয়ে হয়ে চলে যাচ্ছে, বুঝতে না দিলেও ও কষ্টে ছিল। তাই সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিল না। আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল, ‘বাবা, আর কিছু বছর পর আমিও বিয়ে করব। মা বলছে, আবার একা হয়ে যাবে। মা একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মা যদি ভাল থাকে, ভাল অবশ্যই’।” (Dilip Ghosh)
রাজা আরও বলেন, “বাহ্যিক ভাবে ও হয়ত সবাইকে দেখিয়েছে যে মেনে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়ত মেনে নিতে পারেনি। যে একেবারে একা হয়ে গেলাম! বাবার কাছ থেকেও চলে এলাম, মা-ও চলে গেল। গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিল ছেলেটা। মৃত্যুর কারণ আমার কাছে ধোঁয়াশা। নর্মাল ডেথ আমার মনে হয় না।”
মঙ্গলবার নিউটাউনের শাপুরজির ফ্ল্যাটে রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলে প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়ের রহস্যমৃত্যু ঘটে। রিঙ্কুই তড়িঘড়ি পৌঁছে, গাড়ি চালিয়ে অচৈতন্য ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে প্রীতমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, হাসপাতালে আনার চার-পাঁচ ঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে সৃঞ্জয়ের। অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। রিঙ্কু জানান, ছেলের স্নায়ুর অসুখ ছিল। ওষুধও চলছিল।
এদিন সকালে দিলীপ সংবাদমাধ্যমকে জানান, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে না পেলে বুঝতে পারছেন না তাঁরা। তবে মাদকজনিত সমস্যা ছিল প্রীতমের, কাউন্সেলিং চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এমন ঘটল কী করে, তা তিনিও বুঝতে পারছেন না বলে জানান। আজকাল তরুণদের মধ্যে নেশার যে প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেই নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন দিলীপ। আর তার পরই এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন রিঙ্কুর আগের পক্ষের স্বামী রাজা। গতকাল আর জি কর হাসপাতালের বাইরেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। রাতে নিমতলা শ্মশানেও উপস্থিত ছিলেন।
আরও দেখুন