কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই ঘুরে গিয়েছেন। আজ আবার রাজ্যে পা রাখছেন অমিত শাহ। অথচ কোথাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশে দেখা নেই দিলীপ ঘোষের। সেই নিয়ে বঙ্গ বিজেপি-তেই বিভাজন চোখে পড়ছে। সেই নিয়ে আবারও সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন বিজেপি-র একদা রাজ্য সভাপতি। কোথাও কি অভিমান জমেছে তাঁর মনে? উত্তর দিলেন অকপটে। (Dilip Ghosh)
বরাবরের মতোই শনিবার ইকো পার্কে হাঁটতে বেরোন দিলীপ। সেখানে শাহের আগমনের প্রসঙ্গ ওঠে। শনিবার কলকাতায় পা রাখছেন শাহ। রাতে বাইপাসের ধারের একটি হোটেলে থাকবেন। রবিবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে তিনটি কর্মসূচি রয়েছে। পাশাপাশি, রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও দেখা যাবে শাহ। তাঁকে স্বাগত জানাতে বিজেপি-র অন্দরে চরম তৎপরতা দেখা গেলেও, দিলীপকে দেখা যাচ্ছে না কোথাও। (West Bengal BJP)
এর আগে আলিপুরদুয়ারে নরেন্দ্র মোদির সভাতেও ডাক পাননি দিলীপ। সেই সময় তাঁর দাবি ছিল, উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মোদি। সেখানকার নেতারাই তাঁকে স্বাগত জানাবেন। দক্ষিণবঙ্গ বড় কোনও নেতা এলে তিনি থাকবেন। যদিও আলিপুরদুয়ারের সেই সভায় মোদির একদিকে সুকান্ত মজুমদার এবং অন্য দিকে শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা যায়। জানা যায়, মোদির সভায় ডাকাই হয়নি দিলীপকে।
সেই নিয়ে জল্পনার মধ্যেই আজ দিলীপের একেবারে বাড়ির কাছের হোটেলে উঠছেন শাহ। সেখানে কি তাহলে দেখা যাবে তাঁকে? তাঁকে কি ডাকা হয়েছে? জবাবে দিলীপ বললেন, “না। বড় নেতারা না ডাকলে আমি যাই না। বড় নেতাদের মান-সম্মান আছে। তাঁরা যাদের ডাকেন, তারা যায়। আমি প্রয়োজনে যাই। আমার প্রয়োজন হয় না। নিজে সংগঠনের কাজ করি। প্রয়োজন পড়লে তাঁরা ডাকেন, কী করতে হবে বলেন। আমরা তা পালন করি মাত্র।” শাহ যে হোটেলে থাকছেন, তা দিলীপের বাড়ি থেকে মাত্র ১.৫-২ কিলোমিটার দূরে। তা সত্ত্বেও কেন যাচ্ছেন না তিনি? দিলীপের জবাব, “আগে গিয়েছিলাম, যখন সভাপতি ছিলাম। এখন অন্যরা দায়িত্ব সামলাচ্ছে। আমরা কার্যকর্তার বৈঠকে থাকব।”
নির্বাচনমুখী পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আলিপুরের সভা থেকে নির্বাচনের সুরও বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন মোদি। কিন্তু দিলীপ কেন এসবে নেই? দিল্লির নেতৃত্বের সভায় ডাক না পাওয়ায় তিনি কি অভিমানী? উত্তর দিতে গিয়ে আবারও নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরলেন দিলীপ। বললেন, “অভিমানের কী আছে? রাজনীতিতে নেতাদের পিছনে পিছনে ঘোরা একটা ট্রেন্ড হয়েছে। কারণে অকারণে ১০০-২০০ দিন সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকে। দেখা করে না, কিছু না। এটা একটা কালচার হয়ে গিয়েছে। সবাই ভাবে এটাই হয়ত ঠিক। আমাদের দলের একটা শৃঙ্খলা আছে। যে বৈঠকে-অনুষ্ঠানে যেতে বলা হয়। সেখানেই যায় কর্মীরা। নেতারা কোথায় থাকবেন, দল ঠিক করে। আমরা সেটাই মেনে চলি, ওটাকেই শৃঙ্খলা বলি।”
রাজ্যে বিজেপি-কে যিনি দাঁড় করিয়েছিলেন, সেই দিলীপ ইদানীং দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন কি না, এই প্রশ্নে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বিজেপি তাঁর অবদান অস্বীকার করছে বলেও উঠছে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার মোদি যখন আলিপুরদুয়ারে, এ নিয়ে দিলীপের মতামতা চাওয়া হয়েছিল। সেই সময় দিলীপের বক্তব্য ছিল, “কে অবদান স্বীকার করল, কে অস্বীকার করল, তাতে কিছু যায় আসে না।” দিলীপকে মোদির সভায় না ডাকা নিয়ে সেই সময় দায় এড়াতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। শাহ সমীপেও কেন ডাক পেলেন না দিলীপ, বিজেপি-র তরফে কিছু জানানো হয়নি।
আরও দেখুন