কলকাতা: রাজনীতি যখন করেছেন, সর্বস্ব দিয়েই করেছেন। এখন সংসার জীবনেও নিজেকে পুরোপুরি সমর্পণ করে দিলেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। জামাইষষ্ঠীর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছলেন তিনি। সঙ্গে দেখা গেল স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকেও। তবে যে সময় দিলীপ জামাইষষ্ঠী খেতে গেলেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তিনি যখন জামাই ষষ্ঠী খেতে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছলেন, সেই সময় শহরের অন্য প্রান্তে বঙ্গ বিজেপি রাজনৈতিক রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত। স্বয়ং অমিত শাহ সেখানে উপস্থিত। (Dilip Ghosh)
রবিবার জামাইষষ্ঠী পালিত হচ্ছে রাজ্যের সর্বত্র। সদ্য বিবাহিত দিলীপের জন্য এটিই প্রথম জামাইষষ্ঠী। সেই মতো রবিবার দুপুরে স্ত্রী রিঙ্কুকে সঙ্গে নিয়ে বাইপাসের ধারে, মুকুন্দপুরে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যান দিলীপ। জামাইষষ্ঠীতে দিলীপের সঙ্গী হন তাঁর মা-ও। তাঁদের অভিবাদন জানাতে দেখা যায় রিঙ্কুর দাদাকে। সবার আগে দিলীপই ভিতরে ঢুকে যান। এর পর একে একে ভিতরে ঢুকতে দেখা যায় তাঁর মা ও স্ত্রী রিঙ্কুকে। (Jamai Sasthi)
গত ১৮ এপ্রিল দিলীপ ও রিঙ্কপর চারহাত এক হয়। তাঁদের বিবাহিত জীবন একমাসের একটু বেশি সময়ের। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সইয়ে হয়েছে দু’জনকে। বিয়ের পর একমাসও কাটেনি, রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয় ওরফে প্রীতমের দেহ উদ্ধার হয় নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে। শক্তহাতে সেই সময় রিঙ্কুকে সামলেছিলেন দিলীপ। কিন্তু শ্মশানে তাঁর বিধ্বস্ত চেহারাও নজর কেড়েছিল সকলে। আজীবন পিছুটানহীন থাকলেও, মরমে মরমে তিনিও যে পুত্রশোক উপলব্ধি করছেন, অকপটেই জানান সেকথা। স্ত্রীকে নিয়ে সম্প্রতি আগরতলায় মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরেও হাজির হন। স্ত্রীর জীবনে শান্তি চেয়ে প্রার্থনা করেন।
তবে দিলীপ নিজে কতটা শান্তিতে আছেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে ধরা দিচ্ছে। কারণ একসময় যে বিজেপি-কে রাজ্য়ে একাহাতে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন তিনি, আজ সেখানে তিনি কোণঠাসা বলেই ঠাহর হচ্ছে। যে কারণে বিজেপি-র একদা রাজ্যসভাপতি, লোকসভার সাংসদ, দিল্লির নেতাদের পাশে আর ডাক পাচ্ছেন না ইদানীং। নরেন্দ্র মোদির সফরে আলিপুরদুয়ারে তাঁর পাশে সর্বক্ষণ সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গেলেও, সেখানে ডাক পাননি দিলীপ। আবার এই সময় রাজ্য সফরে যখন খাস কলকাতায় হাজির শাহ, শহরে থেকেও সেই সফরেও জায়গা হয়নি দিলীপের।
দিলীপ যদিও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই জানিয়েছেন, ‘বড় নেতা’দের পিছু পিছু ঘোরা ধাতে সয় না তাঁর। তাঁকে কেউ না ডাকলে, নিজে থেকে যান না। নিজেকে বিজেপি-র সাধারণ কর্মী হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। সেই সাধারণ মানুষের মতোই এদিন জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি গেলেন তিনি।
আরও দেখুন