NOW READING:
হাসপাতালে চিকিৎসকদের শাসানি BJP-র কৌস্তভ বাগচির, থামাতে গেলে বললেন, ‘আমাকে ছোঁয়ার যোগ্য নন’
July 2, 2025

হাসপাতালে চিকিৎসকদের শাসানি BJP-র কৌস্তভ বাগচির, থামাতে গেলে বললেন, ‘আমাকে ছোঁয়ার যোগ্য নন’

হাসপাতালে চিকিৎসকদের শাসানি BJP-র কৌস্তভ বাগচির, থামাতে গেলে বললেন, ‘আমাকে ছোঁয়ার যোগ্য নন’
Listen to this article


ব্যারাকপুর: রোগীর মৃত্যুতে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের শাসানি। কাঠগড়ায় বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচি। শাসানির ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ব্যারাকপুর হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের শাসানি দিতে শোনা যায় তাঁকে। এই ঘটনায় কৌস্তভের গ্রেফতারি চেয়ে সরব হয়েছে ডক্টর্স ফোরাম। কৌস্তভের গ্রেফতারি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিবকে। (West Bengal BJP)

ব্যারাকপুরের সারদা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ঘটনা। সেখানে গতকাল ৬৫ বছর বয়সি এক রোগীর মৃত্য়ু হয়। রোগীর মৃত্যুতে হাসপাতালে ঢুকে সকলকে শাসানোর, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ কৌস্তভের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে ঢুকে তিনি কার্যত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। (Koustav Bagchi)

হাসপাতাল থেকে যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে এক RMO-কে শাসাতে শোনা যায় কৌস্তভকে। ওই RMO বলেন, “আমি অক্সিজেন খুলতে বলিনি স্যর।” পাল্টা কৌস্তভ বলেন, “তুমি RMO তো? তাহলে দায়িত্ব কার?” সামনে বসা এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে যান তরুণ RMO. কিন্তু তাঁকে বাধা দেন কৌস্তভ। বলেন, “অ্যাই, অ্যাই, তোমার দায়িত্ব তো! তোমার বাবা নয় ও। হেঁ-হেঁ-হেঁ কী? উনি কী করবেন? তুমি RMO, উনি না। RMO-টা কে?”

RMO-র উদ্দেশে ফের কৌস্তভ বলেন, “তুমি অক্সিজেন খুলতে না করেছিলে?” RMO বলেন, “আমি খোলার কথা বলিনি স্যর।” এতে কৌস্তভ বলে ওঠেন, “তুমি বলোনি? তাহলে কে বলেছিল অক্সিজেন খুনতে? সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাই কে খুলেছে। আপনি খুলতে না বলার পরও যদি কেউ খুলে থাকে, তাহলে এটা পরিকল্পিত খুন। এটায় মামলা হবে। RMO না বলার পরও যদি কেউ খুলে থাকে, দেখান আমাদের। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, তাঁরা বলেননি, RMO বলেননি, তাহলে নির্দেশ ছাড়া তে অক্সিজেন মাস্ক খুলল?”

সিসিটিভি ফুটেজ না দেখালে সারারাত হাসপাতাল ঘেরাও হবে, একজনকেও বেরোতে দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন কৌস্তভ। বলেন, “আমি বলছি, সিসিটিভি ফুটেজ না দেখালে আজ সারারাত ঘেরাও হবে। একটা লোককেও বেরোতে দেব না। কী পরিস্থিতি হবে দেখতে পাবেন। আর আরএমও, ন্যাকামি মারা!” কৌস্তভের পাশ থেকে একজন বলে ওঠেন, “লাইসেন্স ক্যানসেল করে দেব।” 

তিনি না বলার পরও যদি কেউ অক্সিজেন মাস্ক খুলে থাকেন, তাহলে RMO কেন অভিযোগ জানাননি, প্রশ্ন তোলেন কৌস্তভ। সেই সময় হাসপাতালের তরফে বয়স্ক একজন এগিয়ে আসেন তাঁকে শান্ত করতে। কিন্তু তাতে আরও সুর চড়িয়ে কৌস্তভ বলেন, “একদম তেলাতে আসবেননা। আমি ভদ্রভাবে বলছি। গায়ে হাত দেবেন না। আমাকে ছোঁয়ার যোগ্য নন আপনি। আপনার সঙ্গে বন্ধ ঘরে কথা বলার জন্য আসিনি আমি। ডাক্তারবাবু, RMO-রা বলছেন, অক্সিজেন খুলতে বলেননি। তাহলে কে খুলেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাই।”

কৌস্তভের শাসানির ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এবিপি আনন্দে কৌস্তভ বলেন, “আমাদেরই এক কার্যকর্তার বাবা। ৬৫-৬৬ বছর বয়স। সন্ধেয় খবর নিলাম, ঠিক ছিলেন। হঠাৎ নারা গেলেন। অক্সিজেন মাস্ক খুলে ভুলে গিয়েছেন লাগাতে হবে। বাড়ির লোকের অভিযোগ, গাফিলতিতে নারা গিয়েছে। আমি গেলে RMO, টেকনিক্যাল স্টাফ, নার্স- এ বলছেন, আমি বলিনি, ও বলছেন, আমি বলিনি। RMO-কে বললাম, আপনার দায়িত্ব। আপনি না বললে কারও ক্ষমতা নেই মাস্ক খোলার। আমি না থাকলে গোটা হাসপাতাল ভাঙচুর হতো, ডাক্তাররা মার খেত। আমি কোনওটাই করতে দিইনি। আইনজীবী হিসেবে আমি আইনের গণ্ডিগুলি ভাল করে জানি যে, কতটা যাওয়া উচিত, কতটা নয়।” কৌস্তভের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন। কিন্তু কৌস্তভের বক্তব্য, “বাংলার ডাক্তার সংগঠনকে বলব, এসব না করে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করুন।” 

কৌস্তভ জানিয়েছেন, তিনি চান বিষয়টি আদালতে যাক। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও প্রত্যাহার করে নিয়েছে রোগীর পরিবার।

 



Source link