জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইউসেবিও-ফিগোর ফুটবল দেশ হিসেবে মানুষ বহু বছর চিনেছে পর্তুগালকে। সেই ১৯২১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের এই রাষ্ট্র। তবে ‘আ সেলকাও’ প্রথম ‘সিলভারওয়ের’-এর স্বাদ পেয়েছে ২০১৬ সালে। ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো কাপ (UEFA Euro 2016) জেতে পর্তুগাল। আর এই ট্রফির ঠিক তিন বছর পর উয়েফা নেশনস লিগ (UEFA Nations League 2018–19) জেতে পর্তুগাল। ২০২৫ সালে স্পেনকে হারিয়ে (Portugal vs Spain, UEFA Nations League 2025 Final) ফের এই ট্রফি জিতল সবুজ-মেরুন বাহিনী। আর বিগত তিন বছরে পর্তুগালকে তিনটি জাতীয় খেতাব দেওয়া মানুষটির নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo)। কিংবদন্তির আর কোনও বিশেষণেরই প্রয়োজন নেই। যা বলা হবে, তাই তার সম্মানে কম পড়ে যাবে!
গত রবিবার, মিউনিখের আলিয়াঞ্জ এরিনায় এক রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে পর্তুগাল তাদের দ্বিতীয় নেশনস লিগ জেতে স্পেনকে হারিয়ে। রোনাল্ডোর টিম টাইব্রেকারে ইউরো চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে নেশনস লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খেলা ২-২ থাকায় তা ফলের আশায় গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু সেখানে কোনও ফয়সলা না হওয়ায়, ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারিত হয় পেনাল্টি শুটআউটে। আর সেখানে পর্তুগাল ৫-৩ গোলে স্পেনকে হারিয়েছে। পর্তুগাল জিততেই সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে শিশুর মতো অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন রোনাল্ডো। সেই ভিডিয়ো আর ছবি এখনই ইতিহাসের পাতায়।
আরও পড়ুন: বোর্ডের চরম পদক্ষেপে শহর বদল! অবিভক্ত ভারতের রাজধানীতেই মহারণ, সোমে পড়ল সিলমোহর
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে মার্টিন জুবিমেন্দি ও মিকেল ওয়াইরসাবালের গোলে দু’বার এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। নুনো মেন্দেস ও রোনাল্ডোর গোলে দু’বারই সমতা ফেরায় পর্তুগাল। কিন্তু পুরো ফাইনাল খেলতে পারেননি সিআর সেভেন। ৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন। তাঁর পরিবর্তে গনসালো রামোস নামেন। প্রবল করতালিতেই মাঠ ছেড়েছেন রোনাল্ডো। ফাইনালে ওয়ার্ম-আপ করার সময় থেকেই পায়ে অস্বস্তি বোধ করেছিলেন তিনি। ফাইনাল বলেই খেলা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। কারণ তিনি যে রোনাল্ডো। যাঁর কাছে দেশ সবার আগে।
রোনাল্ডো খেলার পর বলেন, ‘আমি ওয়ার্মআপের সময়েই পায়ের সমস্যা অনুভব করেছি। কিছুদিন ধরেই এটা বুঝতে পারছি। কিন্তু জাতীয় দলের জন্য, পা ভাঙতেও রাজি। এই ট্রফির জন্য, আমাকে খেলতেই হত এবং আমি আমার সর্বস্ব দিয়েছি। ক্লাবের সঙ্গে আমার অনেক শিরোপা আছে, কিন্তু পর্তুগালের হয়ে জেতার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না। এ ট্রফি নয়, এগুলো চোখের জল। এটা একটা লক্ষ্য পূরণ এবং অনেক আনন্দ। নেশনস লিগ জয়ের পর আমাদের বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস দিল। বিশ্বের যে কোনও দলকে হারানো সম্ভব। আমি অনেক দেশে বাস করেছি, অনেক ক্লাবের হয়ে খেলেছি, কিন্তু যখন পর্তুগালের কথা আসে, তখন এটা সবসময়ই বিশেষ অনুভূতি।’
চল্লিশেও অবিশ্বাস্য রোনাল্ডো! উয়েফা নেশনস লিগে ৯ ম্যাচে ৮ গোল করলেন বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে। হলেন টুর্নামেন্টের সর্বাধিক গোলদাতা। সেমি ফাইনাল-ফাইনালেও গোল করলেন। দেশকে ট্রফিও জেতালেন। খেলা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে নিজের আগামীর পরিকল্পনার প্রসঙ্গে আল-নাসের সুপারস্টার বললেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমার বয়স কত, স্পষ্টতই আমি শুরুর তুলনায় শেষের কাছাকাছি, কিন্তু আমাকে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে হবে। যদি আমি গুরুতর আহত না হই, তাহলে আমি এগিয়ে যাব।’ রোনাল্ডো বুঝিয়ে দিলেন যে তিনি তৈরি আগামীর যুদ্ধের মহাযোদ্ধা হতে।
আরও পড়ুন: সুন্দরী মালকিনের অনিচ্ছাতেও ঘরে ঢুকেছিলেন স্টার, তাঁকে মারতে যাচ্ছিলেন ‘সরপঞ্চ’ও!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)