কলকাতা : “কারও যোগ্য চাকরি বাতিল করা যাবে না।” চাকরি বাতিল মামলায় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের গতকাল সওয়ালের পর আজ এই ইস্যুতে সিপিএমের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন দলের অন্যতম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এদিনই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়ালের বিরোধিতা করে এসএফআইও। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা অসম্ভব, সমস্ত প্যানেল বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষার পক্ষে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
তার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, “একেবারে দুর্নীতির কথা সামনে এনেছিলেন যিনি প্রথম তিনি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য । তিনি এতদিন ধরে বলে যাচ্ছিলেন যে, এদের সবার…চাল এবং কাঁকর আলাদা করা হোক। স্কুল সার্ভিস কমিশন সেটা করছে না। কোর্টকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু, কারো যোগ্য চাকরি বাতিল করা যাবে না। পরীক্ষা দিয়ে, লেখাপড়া করে, পাশ করে নিজের যোগ্যতায় যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, টাকা দিয়ে দুর্নীতির চাকরি হিসাবে তাঁদের গণ্য করা যাবে না। উকিল তাঁদের নানারকম যুক্তি-তর্ক থাকতে পারে। কখন কে সেই কারণে কী বলবেন, তার যুক্তি তাঁরা বলবেন। কিন্তু, সমগ্র ২০-২৫ জন উকিল বলার পর তো কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু, সিদ্ধান্ত যা-ই হোক, কিন্তু যোগ্য ন্যায্য কারো চাকরি যেন খারিজ না হয়। এটা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে, এসএসসিকে । নাহলে তাঁদের মাথাগুলোকে জেলে পুরতে হবে।”
এদিনই SFI-এর রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, “বিকাশবাবু একজন স্বনামধন্য আইনজীবী। উনি আইনজীবীর জায়গা থেকে ওঁর যা মনোভাব তা রেখেছেন। আমাদের এটাই মনোভাব, যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে হবে। এই আলাদা করার দায় সরকারের। সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিচারব্যবস্থার এই দায় নয়। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার দায় বিচারব্যবস্থার নয়। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার দায় সরকারের। তদন্ত-প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বেশ কিছুটা অগ্রসর হয়েছিল এইদিকে যে, কারা অযোগ্য সেই লিস্ট করার প্রক্রিয়া। তাহলে সেই প্রক্রিয়াটা কেন থেমে গেল ? আমাদের পরিষ্কার স্ট্যান্ড, যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে হবে। যদি রি-এক্সামিন করতে হয় তাহলে অযোগ্য মনে করা হয়েছে যাঁদের, যাঁদের অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের রি-এক্সামিন করো। যাঁরা যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছেন তাঁরা কেন রি-এক্সামিনড হবেন ?”
SSC-র ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে শুনানি পর্ব শেষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সমস্ত নিয়োগটাই বেআইনি। মেরিট-ডিমেরিটের প্রশ্ন আসে না। তাহলে ফ্রেশ রিক্রুট করো। সেটা নিয়ে বিচারপতিদের ধারণা ছিল, ফ্রেশ রিক্রুটি মানে আবার সবাইকে ডাকবে। সেটা ক্ল্যারিফাই করলাম। সবাইকে কেন ? যাঁরা তখন অ্যাপিয়ার করেছিলেন, তাঁদেরই আবার চান্স দেওয়া হোক। তাঁরা ফ্রেশ পরীক্ষা দিয়ে আসবেন। তার জন্য যদি বয়সটা কোনও বাধা হয়, সেটাকে খণ্ডন করে দাও। সেগ্রিগেশন সম্ভব নয়। সমস্ত প্রক্রিয়াটাই বেআইনি হয়েছে। যখন কোনও প্রক্রিয়া বোইনি হয়, সেখান থেকে ভালো-মন্দ বাছা যায় না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে কিছু ভালো ছেলে-মেয়ে হয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন যদি বিচারপতিরা আমাদের সঙ্গে থাকেন, তাহলে যাতে ফ্রেশ এঁরাই সিলেক্ট হয়ে আসতে পারেন, সেজন্যই বক্তব্য রেখেছি।”
আরও দেখুন