জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দিল্লিতে জোর ধাক্কা বিজেপির। প্রায় তিন দশক পর দিল্লির তখত তাউসে ফিরতে চলেছে বিজেপি। হেরেছেন খোদ অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া। কোনওক্রমে মুখরক্ষা করেছেন আতিসি মার্লেন। দিল্লি বিধানসভায় ৭০ আসনের মধ্যে প্রয়া ৪৮ আসন জিততে চলেছে বিজেপি। আপ ২২টিতে। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে আপের বিরুদ্ধে। কেজরিওয়াল-সহ দলের একাধিক নেতা জেলে গিয়েছেন। কেজরিওয়ালের বাসভবনকে সিসমহল বলে প্রচার চালিয়েছে বিজেপি। তবে তার পরেও আপের হারের পেছনে একটা বড় ফ্য়াক্টর হয়ে উঠেছে কংগ্রসে।
আরও পড়ুন-পড়াশোনার জন্য বকুনি বাবার! অভিমানে অ্যাসিড খেয়ে জীবন শেষ করল ১৫-র মেয়ে…
দিল্লি বিধানসভা ভোটে এবার আপের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও আসন সমঝোতা হয়নি। ফলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো প্রার্থীর ক্ষেত্রে হারের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে কংগ্রেসের সন্দীপ দীক্ষিত। হেরেছেন মণীশ সিসোদিয়াও। ভোট পাওয়ার কথা বিবেচনা করলে বিজেপি পেয়েছে ৪৫.৮ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, আপ পেয়েছে ৪৩.৮ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, কংগ্রেস পেয়েছে ৬.৪ শতাংশ ভোট। এখন কংগ্রেসের ভোট আপের সঙ্গে যোগ হলে ৫০ শতাংশ ভোট হয়ে যেতে জোটের। সেক্ষেত্রে খুব সহজেই বেরিয়ে যেতে পারত আম আদমি পার্টি। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বলেছেন, মানুষ বদল চেয়েছে। কিন্তু সংখ্যাতত্ব সেই কথা বলে না।
রাজনৈতিক মহলে একদিকে অভিযোগ উঠছে যে আপকে হারিয়ে দিল কংগ্রেস। অন্যদিকে, এমনটাও অভিযোগ উঠছে আম আদমি পার্টি জেদ ধরে থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেনি। ফলে দিল্লিতে বিজেপির চলে আসার দায় কংগ্রেস ও আপ-দুপক্ষেরই। জাতীয় স্তরে বলা হচ্ছে বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র ইন্ডিয়া জোট। এখন এই যদি অবস্থা হয় তাহলে কোথায় জোট। ফারুক আবদুল্লা বলেছেন, নিজেদের মধ্যে এভাবে লড়াই করতে থাকলে প্রতিপক্ষ জয়ী হতেই থাকবে।
অনেকগুলো ফ্যাক্টর আপের হারের পেছনে রয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ফ্যাক্টর হল দুর্নীতির অভিযোগে আপের ভাবমূর্তি প্রবলভাবে ধাক্কা খাওয়া। একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে দুর্নীতিতে। কেজরিওয়াল দাবি করেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুত্-এ অনেক কিছু করেছে কিন্তু সব জায়গায় তা করতে পারেনি। সেই জায়গাটা প্রচার করেছে বিজেপি। তাতে লাভ তুলেছে বিজেপি। অন্তত ১৫ জায়গায় ফল অন্যরকম হতে পারত।
দিল্লির ফল নিয়ে কংগ্রেস নেতা সৌম আইচ রায় বলেন, গোটা, পঞ্জাব, হিমাচল, হরিয়ানার ভোটের সময় বিজেপির পালে হাওয়া দিয়েছে আপ। এবার দিল্লিতে কংগ্রেস তার নিজের মতো করে লড়াই করেছে। গোট বিষয়টি এবার আপের ভাবা উচিত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বরাবরই বলে থাকেন যে রাজ্যে যে শক্তিশালী সেখানে তাকে সাহায্য করা উচিত কংগ্রেসের। দিল্লিতে সেই ফর্মুলা মানেনি রাহুল গান্ধীরা। দিল্লিতে আপ ২২ আসন পেয়ছে। কিন্তু কংগ্রেস সমঝোতা না করে কী সুবিধে পেয়েছে? দিল্লিতে এবার তারা শূন্য। নয়া দিল্লি আসনে কেজরিওয়াল হেরেছেন ৪০৭৯ ভোটে। ওই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ৪৫৬৮ ভোট। ওই ভোট কেজরি পেলেই মান রক্ষা হত আপের। ফলে গোটা বিষয়টি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সেই আসন সমঝোতার উপরেই। তাই এই ভোটে একে অন্যকে টেনে নামানো ছাড়া আর কিছুই হল না। সেই সুয়োগই বেরিয়ে গেল বিজেপি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)