সেলিম রেজা | ঢাকা: সংঘর্ষে উত্তপ্ত বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি। শুক্রবার খাগড়াছড়িতে ৩ জন নিহত হয়েছেন। খাগড়াছড়ির সংঘর্ষের জেরে উত্তাল ছিল রাঙামাটি। সেখানেও একজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে বাংলাদেশ প্রশাসন। খাগড়াছড়িতে নিহতরা হলেন, রুবেল ত্রিপুরা (২৫), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও জুনান চাকমা (২০)। রাঙামাটি সদরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পরে হিংসার ঘটনা ঘটে। জেলা সদরের বনরূপা, উত্তর কালিন্দীপুর, কালিন্দীপুর ও বিজন সরণি এলাকার দেড় কিলোমিটার জুড়ে সংঘর্ষ চলে।
আরও পড়ুন-তিরুপতির লাড্ডুতে পশুর চর্বি! প্রসাদ হিসেবে বিলি হয়েছিল রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানেও
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে শুক্রবার সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম অনিক কুমার চাকমা। তার গ্রামের বাড়ি রাঙামাটি সদরের নোয়াদমের জীবতলী ইউনিয়নে। তবে, অনিক নামে যে যুবকও মারা গেছেন। তিনি কোথায় এবং কীভাবে মারা গেছেন, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। হাসপাতালে তাকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, হামলাকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কার্যালয়ে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে কার্যালয়ের নিচের অংশ পুড়ে যায়। একটি বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর, বিভিন্ন স্থাপনা ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ এবং বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটি শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় এক বাঙালি যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার জেলার দীঘিনালায় হিংসার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে সেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে পুরো খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটি জেলায়।
ওই হিংসা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থির করতে পাহাড়ি আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলে হামলা করার চেষ্টা করছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটির সহিংস ঘটনায় পাহাড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গুজবের কারণে ভয়ভীতিতে আছেন বাংলাদেশের পাহাড়ের সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, পুলিসের টহল জোরদার করা হয়েছে।
হিংসা এড়াতে প্রত্যেককে সহনশীল হতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শন করেন। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)