জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রায় ১৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হল তাঁকে। আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিত্সকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে প্রায় রোজই সিবিআই দফতরে হাজির দিয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। গত পনের দিন ধরে রোজই সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতেন সন্দীপ। তারপর বাড়ি ফিরে আসতেন। তাঁর বাড়িতে হানাও দেয় সিবিআই। কিন্তু সোমবার সন্ধের ঘটল একেবারে নতুন ঘটনা। এদিন সন্ধেয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। তার পরেই জানা যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-‘CP হয় আসুন নইলে ইস্তফা দিন’, ডাক্তারদের অবরোধে স্তব্ধ কলকাতা!
সোমবারও সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জেরা করা হয় সন্দীপ ঘোষকে। কিন্তু সন্ধেয় তাঁকে গাড়িতে নিয়ে সিজিও থেকে বের হয় তিনটি গাড়ি। তাঁকে নিয়ে সিবিআইয়ের গাড়ি বেরিয়ে যায়। অবশেষে তাকে নিয়ে সিবিআইয়ের গাড়ি পৌঁছে যায় নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের অফিসে। তখনই মনে করা হয়েছিল জেরায় সিবিআইয়ের হাতে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। তার ভিত্তিতেই সন্দীপকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিজাম প্যালেসে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই জানা যায় গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দীপকে।
সিপির পদত্যাগের দাবিতে আজ লালবাজার অভিযান করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারের খবর সেখানে পৌঁছেতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। প্রবল স্লোগানে তোলপাড় ফেলে দেন তাঁরা। শুরু হয়ে যায় মিষ্টি বিতরণ। তবে তাঁরা বলছেন সিপির পদত্যাগের দাবি থেকে তারা সরে আসছেন না। এর পাশাপাশি সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পরই এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন সুখেন্দুশেখর রায়। একটি ভাঙা মিডল স্ট্যাম্পের ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন। মিডল স্ট্যাম্প উড়ে গিয়েছে। এর পরে কী। তাঁর এই পোস্টে নতুন একটি জল্পনা তৈরি হয়ে গেল।
অন্য়দিকে সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে বলে খবর। এটা আইনের ব্যাপার। তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে ছিল। দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠছিল তাতেই গ্রেফতার হয়েছেন বলে খবর। এখানে দলের আলাদা করে মন্তব্য করার কোনও জায়গা নেই। যদি স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা যথাসময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতেন তাহলে এই পরিস্থিতি ডেকে আনতে হতো না।
সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতার নিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই গ্রেফতারি কাঙ্খিত ছিল। আগেই আমি আশঙ্কা করেছিলাম, খুনের মামলায় ইনি গ্রেফতার হবেন কিনা তা জানি না দুর্নীতির মামলায় অবশ্যই ইনি গ্রেফতার হবেন। সেটাই দেখা গেল। নাই মামার থেকে কানা মামা ভালো। এটা কাঙ্খিত গ্রেফতারি।
ওই গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন বলেন, আমি আদ্যপান্ত ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষ। আমি মনে করি যখন মানুষ বিচার করে না তখন ঈশ্বর বিচার করেন। প্রমাণ হল আমি যে কথাগুলো বলেছিলাম তা ভুল ছিল না। সত্যের জয় হল। ২০২৩ সালে রোগী কল্যাণ সমিতিতে কাজ করতে গিয়ে সব তথ্য সামনে এনেছিলাম। সঠিক জায়গায় জানিয়েছিলাম। তখন হয়তো কেউ আমাকে বিশ্বাস করেনি। তখন বিশ্বাস করলে আমরা তিলোত্তমাকেও হারাতাম না আর সিবিআই একটি মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপ্যালকে কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এই দুর্দিনও দেখতে হতো না।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)