কলকাতা: সিপিএম-এর যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তের গ্রেফতারিতে হাইকোর্টে ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। ফোনে কথোপকথনের যে অডিও রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে কলতানকে, সেটি কোথা থেকে পেল পুলিশ, প্রশ্ন তুলেছে আদালত। কোথা থেকে অডিও রেকর্ডিং এল, তা অনুসন্ধান করে দেখা হয়েছি কি? প্রশ্ন করা হল পুলিশকে। পাল্টা রাজ্য জানাল, কলতান ‘না’ বলেননি। (Kalatan Dasgupta)
কলতানের গ্রেফতারি নিয়ে বৃহস্পতিবারও শুনানি হয় আদালতে। সেখানে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানতে চান, যে পেনড্রাইভ পুলিশের কাছে এসেছে এবং যেখান থেকে অডিও ক্লিপটি এসেছে, সেই সোর্সকে কি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? শুধু তাই নয়, পুলিশ সঞ্জীব দাস এবং কলতানকে গ্রেফতার করার আগেই একজন রাজনীতিক অডিও ক্লিপের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন কী করে, প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। আর জি কর কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার পরিকল্পনা শোনা যায় ওই অডিও ক্লিপে, যা সামনে এনেছিলেন কুণাল ঘোষ। আদালত তাঁর দিকেই নির্দেশ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। (Kalatan Dasgupta Arrested)
পুলিশের হাতে অডিও ক্লিপ এল যেমন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হাতেও ওই অডিও ক্লিপ পৌঁছয়। ওই রাজনীতিককে কি বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এদিন কলতানের আইনজীবীরা জানান, তর্কের খাতিরে এই কথোপকথন হয়েছিল বলে যদি ধরেও নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রেও কলতান ওই কাজ করার জন্য কাউকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে শোনা যায়নি।
এদিন আদালতে রাজ্য জানায়, গত পাঁচ মাসে কলতান এবং সঞ্জীবের মধ্যে ফোনে ১৭১ বার কথা হয়েছে। ৬ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩৪ বার কথা হয়। আদালতে রাজ্যের বক্তব্য, “এই ঘটনায় কলতান ‘কৃষ্ণ’ আর সঞ্জীব ‘অর্জুনে’র ভূমিকা পালন করেছেন। মাথা ফাটানোর প্রশ্নের উত্তরেও কলতান না বলেননি। সাহেব, বাপ্পা দা ও দাদু’কে খুঁজে বের করতে কলতানকে করা জেরা প্রয়োজন।”
আদালতে কলতানের হয়ে এদিন সওয়াল করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাটার্য। তাঁর অভিযোগ, কলতান আর জি কর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তাই তাঁকে বদনাম করতে চক্রান্ত হয়েছে। সঞ্জীবের কাছে কিপ্যাড যুক্ত ফোন রয়েছে, যাতে কথোপকথন রেকর্ড করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। অন্য কেউ যদি কথোপকথন রেকর্ড করে থাকেন, সেক্ষেত্রে তদন্ত প্রয়োজন বলে জানান বিকাশরঞ্জন। কলতান কাউকে ফোন করেননি, তিনি ফোন ধরেছিলেন বলেও জনান আদালতে। আজ এ নিয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছে আদালত।
আরও দেখুন