কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিয়ে কর্মসূচিতে ‘না’ কলকাতা হাইকোর্টের। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর পড়ুয়াদের চড়াও হওয়া এবং তার পর সংঘর্ষ, পড়ুয়াদের আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে মামলার শুনানিতেই এমন নির্দেশ দিল আদালত। শুধু তাই নয়, ওই দিন বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ব্রাত্যর যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আদলতের প্রশ্ন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক নয়, এটা জানার পরেও কেন আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী?” (Jadavpur University)
এর পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের কার্যকারিতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। তাঁর বক্তব্য়, “২০১৪ থেকে যাদবপুর থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে, আদালতের মনে সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কেন রাজ্যের কাছে পুলিশি সহায়তা চায়নি?” তিন সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। (Calcutta High Court)
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপাতত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতকে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রীকে নিয়ে সভা, কর্মসূচি করা যাবে না। কোনও সেমিনার বা কর্মসূচি করতে গেলে, তা শিক্ষাবিদদের নিয়েই করতে হবে।” পাশাপাশি একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় জেনেও কেন শিক্ষামন্ত্রী কেন আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন, তা বোধগম্য হচ্ছে না আদালতের।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার ভার কেন বেসরকারি নিরাপত্তরক্ষীদের হাতে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। পাশাপাশি, আদালত প্রশ্ন তোলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে কর্তৃপক্ষ কেন প্রশাসনের কাছে সাহায্য় চাননি?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর জেরে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণের জন্য আবেদন জানানো হয়। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ মোতায়েনের দাবিও ওঠে। সেই প্রেক্ষিতেই এদিন এমন মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এর আগে, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে এবং বাইরের অংশে মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ করেছিলেন। সেই স্থিতাবস্থা পরে যদিও প্রত্যাহার করা হয়।
তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের আমন্ত্রণেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান ব্রাত্য। সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ সংঘর্ষের আকার নেয়। ব্রাত্যর গাড়িতে যেমন হামলা হয়, তেমনই তারং গাড়ির ধাক্কায় এক ছাত্র জখম হন বলে অভিযোগ আসে। সেই ছাত্র দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন। সেই নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই মামলা দায়ের হয় একাধিক। আর সেই প্রেক্ষাপটেই যাদবপুরে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করল আদালত।
আরও দেখুন