কলকাতা: মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ হাইকোর্টের। রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদ, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ। কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ নিয়ে সরাসরি প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শুভেন্দুর আইনজীবীরা। তাতে ছুটির দিনেও বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়। এদিন বিকেলে সেই মতো বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিলেন। শান্তিরক্ষায় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিন শুনানি শুরু হলে রাজ্য সরকারকে আধ ঘণ্টা সময় দেয় আদালত। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে তাদের মতামত চাওয়া হয়। রাজ্যের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়। রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমার খোদ মুর্শিদাবাদ রওনা দিয়েছেন বলে জানায় রাজ্য। কিন্তু আদালত শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পক্ষেই রায় দেয়। আদালত বলে, “এই ধরনের অভিযোগ এলে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে কড়া শাস্তি দিতে হবে। মুর্শিদাবাদে শান্তি এবং সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনাই এই মুহূর্তে প্রধান লক্ষ্য। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ মুর্শিদাবাদে। চাইলে অন্য জায়গাতেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ডাকা যাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।”
কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাপ ছড়াচ্ছিল মুর্শিদাবাদে। বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে ক্রমশ। শনিবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে তিনজনের প্রাণহানিপ খবর মিলেছে। সেই আবহে আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। তাঁর আইনজীবী জানান, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, গোটা রাজ্যে যে পরিস্থিতি, তা সামলাতে অক্ষম রাজ্য পুলিশ ও সরকার। কোনও পদক্ষেপই করেনি তারা। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া গতি নেই। আজই মামলার শুনানি করে রায়দানের আবেদন জানানো হয়।
এদিন শুনানি চলাকালীন, শুভেন্দুর আইনজীবী বলেন, “যেখানে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী বলছেন অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন দরকার।” শুভেন্দু আদালতে যাওয়ার আগেই রাজ্যের তরফে BSF-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে মুর্শিদাবাদে সাত কোম্পানি BSF মোতায়েন করা হয়। কিন্তু শুভেন্দুর আইনজীবী দাবি করেন, জেলাশাসক BSF-কে কাজ করতে দিচ্ছেন না। তাহলে কী চান তাঁরা, জানতে চায় আদালত। এতে শুভেন্দুর আইনজীবী CRPF মোতায়েনের নির্দেশ দিতে বলেন। কোন কোন জেলা স্পর্শকাতর আদালত জানতে চাইলে আমতলার কথা উল্লেখ করেন শুভেন্দুর আইনজীবী। জানান, সেখানে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অশান্তি শুরু হয়।
এতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানায়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ১৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এডিজি পদমর্যাদার আধিকারিকরা রয়েছেন এলাকায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এতে বিচারপতিরা জানান, ভোট পরবর্তী হিংসা-সহ বিভিন্ন সময় রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এতে রাজ্যের সুবিধাই হবে।
আরও দেখুন