নদিয়া: হাইকোর্টের নির্দেশে নদিয়ার গাজনে SC-দের অনুমতি, নজরদারিতে জেলা জজ। গাজন উৎসবের নজরদারির দায়িত্ব জেলা জজকে দিল হাইকোর্ট। ‘উৎসব শেষ না হওয়া পর্যন্ত ৩দিন অন্তর রিপোর্ট দিতে হবে কালীগঞ্জ থানার ওসিকে। কোনও অপ্রীতিকর অবস্থা তৈরি হলে সরাসরি SP-কে নির্দেশ দেবেন বিচারকই। প্রয়োজনে পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেবেন জেলা জজই। এমনিতে জেলা জজদের কথা শোনেন না পুলিশ সুপাররা, দাবি হাইকোর্টের। ‘আদালতের নির্দেশ, পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতায় কেটেছে সমস্যা’, নদিয়ার বৈরামপুরে SC-দের শিবমন্দিরে ঢোকা নিয়ে দাবি রাজ্যের।
প্রসঙ্গত, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে মন্দিরে ঢুকতে বাধা! শিবের পুজোয় বাধা! সম্প্রতি এমনই মারাত্মক অভিযোগ ওঠে নদিয়ার বৈরামপুরে। জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। চরম বিরক্তি প্রকাশ করে মাননীয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেছিলেন, এই সমস্য়া তো বাংলায় আগে ছিল না! কেন উৎসবে যোগ দিতে পারবেন না? পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মাননীয় বিচারপতি। ‘নিচুজাত’, ‘দলিত’, ‘অস্পৃশ্য়’ জাত-পাতের এই রোগ মূলত গোবলয়ের বিভিন্ন রাজ্য়ে দেখা যেত! কিন্তু হিন্দু-মুসলমানের রাজনীতির মতোই কি জাতপাতের ভেদাভেদ এই বাংলায় এবার পুরোপুরি ঢুকে পড়তে চলেছে? বাঙালির এতদিনের সভ্য়তা-সংসকৃতির কি এভাবেই অবনমন হবে? নদিয়ার বৈরামপুর এলাকার শতাব্দী প্রাচীন শিব মন্দির। সাধারণ মানুষের নিত্য় পুজোপাঠের জায়গা।
অভিযোগ, এখানেই কিনা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে শিব মন্দিরে পুজো দিতে দেওয়া হচ্ছে না! এই অভিযোগ শুনে চরম বিরক্তি প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, এটা হয় কী করে? একটা মানুষ তাঁর অধিকার পাবেন না? এটা তো বাংলায় ছিল না। এমন সমস্য়া এখনও বাংলায় নেই বলে বিশ্বাস করি। কেন তাঁরা উৎসবে যোগ দিতে পারবেন না? উল্লেখ্য়, নদিয়ার কালীগঞ্জ থানা এলাকার এই শিব মন্দিরে, তাঁদের প্রবেশের অনুমতি নেই বলে দাবি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের দাবি, তাঁরা তফশিলি জাতি হওয়ায়, পুজোপাঠ থেকে ব্রাত্য় করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, তিন বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। মানুষগুলো। নদিয়ার বৈরামপুরের বাসিন্দা যতন দাস বলেন, আমরা দাস সম্প্রদায়ের মানুষ, সেখানে পুজো দেব, সন্ন্য়াসী হব গাজনে, ওরা হতে দেবে না। মন্দির কমিটির লোক। এই নিয়ে আমরা কৃষ্ণনগরে গেছি, DM-এর কাছে। SP-র কাছেও গেছি। কোনও কার্যকরী হয়নি। তার জন্য় আমরা হাইকোর্ট করেছি।
আরও পড়ুন, ২টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, এক লহমায় বদলে গেল সব, আহত অন্তত ৫০ যাত্রী ! মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বর্ধমানে..
আরও দেখুন