সৌভিক মজুমদার, উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায় ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা : SSC-র ২০১৬ সালের পুরো প্য়ানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ দিয়েছিল, তার ভবিষ্য়ৎ কী ? সোমবার শুনানির আগে এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন। প্রধান বিচারপতি নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করলে, সেখানেই হবে পরবর্তী শুনানি।
ব্য়াপক দুর্নীতির জেরে, SSC-র ২০১৬ সালের পুরো প্য়ানেল বাতিল হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এই প্রেক্ষাপটে আলোচনা শুরু হয়েছে, আরেক চাকরি বাতিলের রায় নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল তার কী হবে ?
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তার আগে ব্য়ক্তিগত কারণ দেখিয়ে, মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি সৌমেন সেন।
আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, “প্রাইমারি রিক্রুটমেন্ট রুল অনুযায়ী একটা প্যানেল থাকা উচিত ছিল। সেই প্যানেলটা আজ পর্যন্ত কেউ চোখে দেখেনি। প্যানেলটাও প্রকাশ হয়নি। জাস্টিস গাঙ্গুলিকে একবার বোকা বানানো হয়েছিল। যখন জাস্টিস গাঙ্গুলি বলেন প্যানেল প্রকাশ করো, এরা ব্রেক-আপ অফ মার্কস প্রকাশ করে দিয়েছিল। প্যানেলটা সামনে আসেনি। পুরো বিষয়গুলো এখান থেকে শুরু হয়।”
২০২৩ সালের ১৬ মে দুর্নীতির অভিযোগে, প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। যাকে চ্য়ালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারা শিক্ষকরা। তাতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্য-র ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে আরও নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৩ মাসের মধ্যে ৩২ হাজার পদে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। সেই নির্দেশ বহাল রাখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই অংশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। নতুন করে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। এই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ওই মামলা যায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। সোমবার শুনানির আগে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
বিচারপতি সৌমেন সেন সরে দাঁড়ানোর পর, প্রধান বিচারপতি এই মামলা পাঠিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
আরও দেখুন