কলকাতা: অক্টোবরে কলকাতায় এসে, বঙ্গ বিজেপিকে ১ মাসে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন অমিত শাহ।কিন্তু সেই টার্গেটে পৌঁছতে ডাহা ফেল করেছে বঙ্গ নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে সদস্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে লকেট চট্টোপাধ্যায়দের। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
কলকাতার রাস্তায় বিজেপির নেতা-কর্মীদরা এভাবেই দলীয় সদস্যপদ গ্রহণের আর্জি জানাচ্ছেন। দলের সদস্যপদ গ্রহণ করতে, পথচারীদের কার্যত হাতে-পায়ে ধরার মতো অবস্থা বিজেপি কর্মীদের। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা কমে যাওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক বিধানসভা উপনির্বাচনে হার। এই প্রেক্ষাপটেই গত ২৭ অক্টোবর, সল্টলেকের EZCC থেকে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখান থেকে ১ মাসে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন তিনি।
কিন্তু সূত্রের দাবি, ১১ ডিসেম্বর, পর্যন্ত এরাজ্যে বিজেপির নতুন সদস্য সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২২ লক্ষ ৮৯ হাজার। অর্থাৎ লক্ষ্যের ২৫ শতাংশও পূরণ করা যায়নি গত একমাসে। সূত্রের দাবি, ভোটের পর সদস্য় সংগ্রহেও, এই পারফরম্য়ান্স দেখে, বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের ওপর বেজায় চটেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি কলকাতায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের দীর্ঘ বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক ঋতুরাজ সিংহর গলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান হতাশা ঝরে পড়ে। বিজেপি সূত্রে দাবি, বৈঠকে তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযানের এমন করুণ দশা যে, আগামীদিনে বহু সাংগঠিক জেলায় মণ্ডল কমিটি গঠন করাই সম্ভব হবে না। কার্যত একই কথা শোনা যায় বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলের গলাতেও। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এমন বহু বিধায়ক রয়েছেন যারা নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল নন। আগামীদিনে এই বিধায়করা যাতে আর টিকিট না পান না সেই ব্যাপারটি নজরে রাখা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় তাঁকে।
এই পরিস্থিতিতে যেন-তেন প্রকারেণ সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ঝাপিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। যেমন, হাজরা মোড়ে ক্যাম্প খুলে বসেছিলেন প্রাক্তন সাংসদ ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়। কেউ আবার বিষয়টা বুঝে উঠতে পারলেন না। এপ্রসঙ্গে বিজেপি নেত্রী বলেন, ” আমরা যাদেরকে করাচ্ছি, তাদেরকে অবগত করা হচ্ছে, যে আপনারা বিজেপির সদস্য হতে আপনারা ইচ্ছুক কিনা, তাহলেই আমরা সদস্যতা করাচ্ছি। করানোর আগে নিশ্চয়ই বোঝানো হচ্ছে। জোর করে কাউকে সদস্যতা করিয়ে কোনও লাভ নেই।”
এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য়মাত্রা পূরণ করতে গিয়ে রাজ্য় বিজেপির নাকানিচোবানি খাওয়ার মতো অবস্থা। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “শীতকালে সার্কাস একটা মজার বিষয়৷ আর সেটা হচ্ছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান ঘিরে৷ মানুষের সাথে যোগাযোগ না থাকলে যা হয়। মানুষের সাথে ওদের সম্পর্ক হয়৷ সদস্য সংগ্রহের নামে সেই নাটক চলছে।”
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Promoter Attack Update: ডেডলাইন দিয়ে কাউন্সিলরের বাড়িতে নোটিস পুলিশের, DGP-র দ্বারস্থ আক্রান্ত প্রোমোটার
আরও দেখুন