মুম্বই: আসন্ন মহারাষ্ট্র নির্বাচনেও উঠল ‘রোহিঙ্গা’ প্রসঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই প্রসঙ্গ তুললেন। মহারাষ্ট্রের বিজেপি-র হয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছেন তিনি। রবিবার মুম্বইয়ের দাদরে প্রবাসী বাঙালিদের সামনে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচার করেন। আর সেখানেই ‘রোহিঙ্গা’ প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল, জাতীয় স্তরে যে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (শরদ পওয়ার)-র সঙ্গে I.N.D.I.A জোটে রয়েছে, একযোগে তাদের নিশানা করেন শুভেন্দু। (Suvendu Adhikari)
পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রোহিঙ্গারা ভারতে ঢুকছে বলে এদিন দাবি করেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য ছিল, “পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৭২টি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেই নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার বার অনুরোধ করেন, চিঠি লেখেন। তার পরও BSF-কে জমি দেওয়া হয়নি। কাঁটাতারের বেড়া লাগানো যায়নি। ফলে রোহিঙ্গারা দলে দলে ঢুকে বাংলার জনবিন্যাস তো পাল্টে দিচ্ছেই, ঝাড়খণ্ডের জনবিন্যাসও পাল্টে দিচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে আপনাদের মধ্যে মিশে গিয়ে, আপনাদের রেশন, জমি, কাজ নিয়ে যাচ্ছে।” পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে, রাষ্ট্রবাদী, ডাবল ইঞ্জিন সরকার গড়ে কাঁটাতারের বেড়া সম্পূর্ণ করবে এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দেশকে সুরক্ষিত করবে বলে দাবি করেন শুভেন্দু। (Maharashtra Assembly Elections 2024)
মহারাষ্ট্রের বিরোধী শিবির, ‘মহা বিকাশ আঘাডি’র তুলনা টেনে শুভেন্দু বলেন, “বাংলার অত্যাচারী শাসক, ভোট পরবর্তী হিংসায় বিজেপি-র কার্যকর্তাদের খুন করেছে। এখনও পর্যন্ত আমাদের ২৩৫ জন কার্যকর্তা শহিদ হয়েছেন। এত অত্যাচারী শাসক দেশের আর কোথাও নেই। বাংলার শাসক এবং এখানকার MVA জোটের মধ্যে মিল রয়েছে। দুই পক্ষই পরিবারতন্ত্র, তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশে ৫ অগাস্টের পর ৫৯৬ মন্দির ভাঙা হয়েছে। এবছর বাংলার ফালাকাটায় মণ্ডপে ঢুকে শাঁখ না বাজাতে বলেছে।”
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে শুভেন্দুর বক্তব্য, “এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কেবলমাত্র সনাতনী এবং জনজাতিদের সমর্থনে ২ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৭ হাজার ভোট পেয়েছি আমরা, যা ৩৯ শতাংশ। লোকসভায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘I.N.D.I’ জোট সবমিলিয়ে যা আসন পেয়েছে, তার তুলনায় বিজেপি-র একার আসনই বেশি। কংগ্রেস ১০০-ও পার করতে পারেনি। তার পরও ওরা এমন ভাষায়, ভঙ্গিতে কথা বলতে শুরু করেছিল, তাতে আমরা যাঁরা রাষ্ট্রবাদে বিশ্বাস করি, ভারতীয় সংস্কৃতী, সনাতনী সংস্কৃতিকে সম্মান করি, আমরা যাঁরা ছত্রপতি শিবাজি, স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে চলতে চাই, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। তাই হরিয়ানার জয় ভারতের রাজনীতিতে একটা মাইলফলক। এমনকি জম্মু ও কাশ্মীরেও এযাবৎকালীন সর্বোচ্চ আসন পেয়েছি বিজেপি। হরিয়ানা এবং জম্মুর জয় আমাদের উৎসাহিত করেছে।” তাই মহারাষ্ট্রে ৮-৯ লক্ষ বাঙালি ভোটার রয়েছে, তাঁরা যাতে বিজেপি-কে ভোট দিয়ে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করেন, আর্জি জানান শুভেন্দু।
আরও দেখুন