কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে থানা শুদ্ধিকরণ কর্মসূচি বিজেপির মহিলা মোর্চার। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মানিকতলায় বিজেপির ডিসি নর্থের অফিসের সামনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঝাঁটা হাতে অভিযানে নামলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ব্যারিকেড টপকে ডিসি নর্থের অফিসের কাছে পৌঁছে যান লকেটরা। পাল্টা লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে পুলিশ। গঙ্গাজল ছিটিয়ে ঝাঁটা হাতে রাস্তা পরিষ্কার করেন বিজেপি কর্মীরা।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গোটা রাজ্যজুড়ে প্রায় ১০০টি থানা ঘেরাও কর্মসূচি নেই বিজেপির মহিলা মোর্চা। সেই অভিযানেরই অঙ্গ হিসাবে এদিন অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে বেহালা থানার সামনেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিজেপির মহিলা মোর্চা। সেখানে পুলিশের সামনেই গোবর জল ও গঙ্গাজল দিয়ে সামনের রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। সঙ্গে ঝাঁটাও দেওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ক্রমাগত গঙ্গাজল ছেটান মহিলা মোর্চার কর্মীরা।
এপ্রসঙ্গে অগ্নিমিত্রা বলেন, “আমরা শুদ্ধিকরণ করতে এসেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশমন্ত্রিত্বে এই যে পুলিশগুলো আছে , আর এই যে পুলিশ অফিসার…যারা ১৪ ঘণ্টা অভয়ার এফআইআর করেননি, যাঁরা সুইসাইড বলে চালানোর চেষ্টা করেছিলেন, যাঁরা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও সৎকার রিপোর্টের টাইম ম্য়াচ করতে পারেনি, যাঁরা দেহ সংরক্ষণ করতে পারেনি, যাঁরা তাড়াহুড়ো করে ময়নাতদন্ত করে দিয়েছেন, আজ তাঁদের শুদ্ধিকরণ করতে এসেছি। আজ বলছে এখানেই দাঁড়ান…লজ্জা করে না !”
এরপরই সেখানে উপস্থিতি পুলিশ অফিসারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনার বাড়িতে মেয়ে-বোন নেই ? বাড়িতে মা আছে ? মেয়ে আছে ? লজ্জা করা উচিত আপনাদের। আমাদের জন্য এই পোশাক পরেছেন। আমাদের টাকায় আপনাদের মাইনে হয়।”
একইভাবে পুরুলিয়াতেও থানা শুদ্ধিকরণ কর্মসূচি পালন করে বিজেপির মহিলা মোর্চার। ঝাঁট দিয়ে পুরুলিয়া টাউন থানার সামনের রাস্তা পরিষ্কার করলেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে উঠল স্লোগান।
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডে দ্রুত ময়নাতদন্ত করতে চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠছে। বিস্ফোরক এই অভিযোগ জানিয়েছেন নিহত নির্যাতিতার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাস। আরজি কর মেডিক্যালের ফরেন্সিক বিভাগের অধ্যাপক অপূর্ব বিশ্বাসের দাবি, ‘তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। নিহতের কাকা পরিচয় দিয়ে একজন বলেছিলেন, ওই দিন ময়নাতদন্ত না হলে রক্তগঙ্গা বইবে। এক প্রাক্তন কাউন্সিলর বলেছিলেন, রক্তগঙ্গা বইয়ে দেবেন।’ সেই দাবি প্রসঙ্গেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন শুভেন্দু। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছেন। দাবি করেছেন, চিকিৎসকের কাকা পরিচয়ে এক ব্যক্তি হুমকি দেয়, ময়নাতদন্ত দ্রুত না করলে রক্তগঙ্গা বইবে। ওই ব্যক্তি পানিহাটি পুরসভার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর, যিনি পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন এবং পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষের ঘনিষ্ঠ। সবাই জানে চিকিৎসকের দেহ তাড়াহুড়ো করে সৎকার করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শ্মশানে হাজির ছিলেন পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক। এটা আরও আশ্চর্যের যে, সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় নিহতের আত্মীয় না হয়েও শ্মশানের নথিতে সই করেছিলেন।’
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন