জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্ত্রী ও স্ত্রীর আত্মীয়দের নির্যাতনে মাত্র ৩৪ বছরেই চরম সিদ্ধান্ত নেন উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা অতুল সুভাষ। লিখে রেখে যান ২৪ পাতার সুইসাইড নোট। যার মধ্যে ৪পাতা হাতে লেখা এবং বাকি ২০ পাতা টাইপ করা। অতুলের কাহিনী শুনে শিউরে ওঠে গোটা দেশ। অতুলের ঘটনায় যখন শোরগোল পড়েছে দেশজুড়ে সেই সময় ১০ ডিসেম্বর বধূ নির্যাতনের একটি মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বিবাহিত সম্পর্কে কোনও সমস্যা হলেই ব্যক্তিগত শত্রুতা বা আক্রোশ মেটাতে বধূ নির্যাতন বিরোধী আইনের ৪৯৮-এ ধারা-কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এবার এই ঘটনায় রবিবার গ্রেফতার করা হল অতুলের প্রাক্তন স্ত্রী নিকিতা, শাশুড়ি নিশা এবং শ্যালক অনুরাগ সিংহানিয়াকে।
আরও পড়ুন- Weather Today: ৯ জেলায় শৈত্য প্রবাহ! বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপ, শীতের দাপটের মাঝেই বৃষ্টির ভ্রুকুটি…
নিকিতাকে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে এবং তাঁর মা নিশা এবং ভাই অনুরাগকে উত্তরপ্রদেশের এলাহবাদ থেকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু পুলিস। অতুলের মৃত্যুর পরে বুধবার তাঁর প্রাক্তন শাশুড়ি নিশা এবং শ্যালক অনুরাগ নিজেদের জৌনপুরের বাড়ি ছেড়েছিলেন। নিকিতা পেশায় ইঞ্জিনিয়র। একটি নামী মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে AI ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কনসালট্যান্ট পদে কাজ করেন। অতুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা গার্হস্থ্য হিংসার মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁরা ৩ কোটি টাকা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি নিজের ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য ৩০ লাখ টাকাও চাওয়া হয়েছিল অতুলের থেকে অভিযোগ এমনটাই।
অতুল কর্মসূত্রে থাকতেন বেঙ্গালুরুতে, সেখানের বাড়ি থেকেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অতুল এক প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করতেন। এবং তাঁর মৃতদেহ কাছ থেকে ২৪ পাতার সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। সেখানে তিনি তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীর আত্মীয়দের দ্বারা হওয়া হয়রানির অভিযোগ কথা লিখে গিয়েছেন। সেই নোটের শুরুতেই লেখা, ‘জাস্টিস ইজ ডিউ’ মানে বিচার এখনও বাকি আছে। সেখানে তিনি পরিষ্কারভাবে নিজের স্ত্রীকে দোষারোপ করেছেন। বাড়িতে হওয়া প্রতিদিনের ঝগড়া-ঝামেলার জন্য নিজের শাশুড়ি, শালা এবং স্ত্রীর এক কাকার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই নোটে তিনি তাঁর চার বছরের নিষ্পাপ ছেলের কথাও উল্লেখ করেছেন।
ছেলের প্রসঙ্গে অতুল লেখেন, ‘বাচ্চাদের প্রতি আমাদের আবেগ এবং ভালবাসা এভাবে অপবিত্র হতে পারে না এবং তারা একজন পুরুষ থেকে একজন মহিলার কাছে টাকা ট্রান্সফার করার (বা তথাকথিত সামাজিক ন্যায়বিচার) হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে না।’ অতুল আত্মহত্যার করার আগে এই সুইসাইড নোটটি একাধিক জনকে ইমেল এবং মেসেজের মাধ্যমে পাঠায়। এমনকি মৃত্যুর আগে অতুল চার মিনিটের একটি ভিডিয়ো করেন। যেখানে তিনি তাঁর সঙ্গে হওয়া মানসিক অত্যাচারের কথা বলেন। এবং তিনি তাঁর এবং তাঁর বয়স্ক বাবা-মায়ের জন্য় বিচারের দাবি জানায়। এরই সঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে তাঁর শেষ ইচ্ছাগুলিও বলেন। তিনি বলেছেন যে, যতদিন না পর্যন্ত অভিযুক্তরা শাস্তি পাচ্ছে, তাঁর অস্থি যেন না ভাসানো হয়। এবং তিনি এ-ও জানান যে, যদি তিনি বিচার না পান তাহলে তাঁর অস্থি যেন কোর্টের বাইরে নর্দমাতে যেন অস্থি ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- Allu Arjun Arrested: অল্লুর গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে! তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলল বিরোধীরা…
এরপরে অতুল অনুরোধ করেন তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেরা যেন তাঁর মৃতদেহ আশেপাশেও না থাকে। মৃত্যুর পর তার পরিবারকে মিথ্যা মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। তিনি তার পরিবারের সদস্যদেরও অনুরোধ করেছিলেন যে কোনও ক্যামেরা বা সাক্ষাতের প্রমাণ ছাড়া তার স্ত্রী বা তার পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করবেন না। অতুলের মৃত্যুর পর ‘জাস্টিস ফর অতুল’ স্লোগান তুলে সুবিচার দাবি করছেন নেটিজেনরা।
আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ…
iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১
কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)