তুহিন অধিকারী, বিষ্ণুপুর: রাজনীতির বাইরেও নিজস্ব জীবন আছে। মাঝে মধ্যে সেই জীবনকে উপভোগ করা যায় বইকি! তাই ইদানীং কালে রাজনীতিকদেরও অন্য ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি দিল্লির ফ্যাশন শোয়ে ব়্যাম্পে হাঁটেন বিজেপি-র সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এবার ব়্যাম্পে দেখা গেল রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডিকে। আদিবাসী ফ্যাশোন শোয়ে ব়্যাম্পে হাঁটলেন তিনি। (Bankura News)
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে ৩৭তম বিষ্ণুপুর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেই মেসার মূল মঞ্চে আদিবাসী ফ্যাশন শোয়ে ব়্যাম্পে হাঁটলেন জ্যোৎস্না। আদিবাসী ভাইবোনদের সঙ্গে নিয়ে ব়্যাম্পে হাঁটলেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী। জানালেন, আদিবাসীরা কোনও অংশে আর কারও থেকে পিছিয়ে নেই। সমাজের সর্বস্তরে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। (Jyotsna Mandi)
আদিবাসী সংস্কৃতিকে তুলে ধরতেই এই বিশেষ ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন হয়। পাশাপাশি, সমাজ সচেতনতার জন্যও আয়োজন হয় বিশেষ। ক্যান্সার নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে বিশেষ গ্রুপ পারফরম্যান্সও ছিল। সেখানে নৃত্য পরিবেশন করেন জ্যোৎস্না নিজেও। সবমিলিয়ে জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন হল। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চ থেকে ব়্যাম্পওয়াক, কী ভাবে সামলালেন তিনি?
জবাবে জ্যোৎস্না বলেন, “এতদিন রাজনীতির জন্য রাস্তায় হেঁটেছি। এবার ব়্যাম্পওয়াক। ফারাক আছে। আদিবাসীদের এই ফ্যাশন শো অভিনব। এর আগে মুকুটমণিপুরেও করেছি। এবার বিষ্ণুপুর।” রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিও এদিন তুলে ধরেন জ্যোৎস্না। তাঁর কথায়, “আমরা যাঁরা আদিবাসী, তফসিলি জাতি ও উপজাতি, মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায়, তাঁর সহযোগিতায়, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে সমাজের উঁচু স্তরে পৌঁছেছি।
আদিবাসী ফ্যাশন শোয়ের মাধ্যমে তা তুলে ধরলাম।” আদিবাসী ভাইবোনদের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষা, শিক্ষা, শিক্ষা। পড়াশোনা করলে তবেই সমাজকে সচেতন করা যাবে, পরিবর্তন ঘটানো যাবে। আজ এখানে পুলিশ, উকিল সকলেই ছিলেন। আদিবাসীরা কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। আমরা সব পেশায় আছি, যা ফুটিয়ে তুলেছি।”
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিষ্ণুপুর মেলা কমিটির সভাপতি অনুসূয়া রায় বলেন, “সবই একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে। অন্যরকম স্বাদ পেতেই এই ফ্যাশন শো। আদিবাসীদের পুরনো সংস্কৃতি, রীতিনীতি ভুলে গিয়েছেন অনেকে। সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে…জল-জঙ্গল-পরিবেশ এবং সামাজিকতা নিয়ে বাঁচার বার্তা তুলে ধরারই চেষ্টা। রাজনীতিকদেরও আলাদা জীবন রয়েছে। প্রত্যেকের আলাদা প্রতিভা আছে, যা প্রকাশ পায় না। আমরা সেগুলি তুলে ধরলাম।” রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলিতে কত উপকার হয়েছে, তাও এদিন তুলে ধরা হয়।
আরও দেখুন