কেউ নষ্ট করল না ফসল, কলা-আখ-বাঁধাকপি পেয়ে মহানন্দে দলমার দামালেরা !
প্রসূণ চক্রবর্তী, বাঁকুড়া: ১৯৭১ এ মুক্তি পাওয়া রাজেশ খান্নার হাতি মেরে সাথী, সিনেমার কথা আজও কেউ ভোলেনি। সেই ছায়াই কি ফিরল এবার বাঁকুড়ায় ? মূলত যেখানে হাতির হামলায় মানুষ জেরবার। চাষের জমি ছারখার। সেখানে এক ব্যাতিক্রমী ছবি ফিরল বড়জোড়ার পাবয়া সংলগ্ন কালপাইনি শ্মশান সংলগ্ন এলাকায়। কাছাকাছি-পাশাপাশি থাকলে বোধহয় বন্ধু হয়ে যায়, তৈরি হয়ে যায় একটা আত্মীক সম্পর্ক। তা মানুষে মানুষে হোক বা জংলী জন্তুর সঙ্গে মানুষের। তার মোক্ষম উদাহরণ হতে পারে এটা।
এই এলাকার জঙ্গলে থাকা একাধিক হাতিকে প্রয়োজনীয় খাবারের যোগান দিচ্ছেন ওই এলাকার মানুষই। কেউ পৌঁছে দিচ্ছেন কলা গাছ, আখ, তো কেউ বাঁধা কপি, বেল তো কেউ কিছু না পেলে খড় আবার কেউ গামলা ভর্তি জল। আর মানুষের পৌঁছে দেওয়া সেই খাবার খেয়েই মহানন্দে দিন কাটছে দলমার দামালদের। যদিও বন দফতর গ্রামবাসীদের এই কাজকে মোটেই সমর্থণ করছেননা। এই ঘটনার জেরে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেই তারা জানিয়েছেন।
বনদফত সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে বড়জোড়া রেঞ্জ এলাকায় ৬০ থেকে ৬২ টি হাতি রয়েছে। কোন অবস্থাতেই যাতে হাতির দলটি জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে ঢুকে পড়তে না পারে সেদিকেও কড়া নজর রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গত তিন চার দিন ধরেই এই হাতি গুলি এক জায়গাতেই রয়েছে। হাতি গুলি কোন অবস্থাতেই যাতে অভূক্ত না থাকে সেকারণেই নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান।
আরও পড়ুন, ‘গ্যাস উত্তোলক সংস্থার গাফিলতিতে জোড়া মৃত্যু’ ! বিস্ফোরক অভিযোগ দুর্গাপুরে, আশঙ্কাজনক আরও ৩
খাবারের খোঁজে অনেকসময়ই হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসে। কখনও খাবার পায়, কখনও আবার চাষের জমিতে হামলা চালায়। কখনও আবার হাতি নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়। তবে এবার ঘুমের ঘোরে আর দাঁতালের মুখোমুখি হতে হবে না। বাঁকুড়া উত্তর বর্ণ বিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের উদ্যোগে এক বিশেষ কৌশল নেওয়া হয়েছে বুনো হাতিদের জন্য।
প্রসঙ্গত বাঁকুড়ার উত্তর বনবিভাগ এলাকার বড়জোড়া রেঞ্জ ও বেলিয়াতোড় রেঞ্জ এলাকায় হাতি করিডোর করা হয়। বা বেলিয়াতোড় জঙ্গল যে সমস্ত গ্রামগুলি রয়েছে সেগুলি হাতি প্রবণ এলাকা। বিভিন্ন সময় দেখা যায় জঙ্গলের মধ্যে খাবার না পেয়ে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়ে খাবারের সন্ধানে এবং তার ফলে মানুষের বহু ক্ষতি হয়। গত বছর এই সাধারণ মানুষদের কথা ভেবে এবং বনের মধ্যেই হাতিদের খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয় বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের পক্ষ থেকে।
আরও দেখুন