ঘরবাড়ি-জীবন বিপন্ন, ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন, বাংলাদেশি হিন্দুদের আর্তি, ‘মোদি সরকার যদি সহায় হয়…’

Estimated read time 1 min read
Listen to this article


সমীরণ পাল, প্রসেনজিৎ সাহা, বাচ্চু দাস: সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ থামছেই না বাংলাদেশে। এর আঁচ পড়ছে এপার বাংলাতেও। উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রোপোল সীমান্তে একদিকে দেশে ফেরার জন্য ভিড় করছেন ভারতে আসা বাংলাদেশিরা, অন্য দিকে, আবার ওপার থেকে দলে দলে ফিরে আসছেন ভারতীয়রা। ল্যান্ড ফোর্স অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-র তরফে জানানো হয়েছে, পেট্রোপোল সীমান্ত দিয়ে রবিবার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষ পারাপার করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশি হিন্দুরা। ভারত সরকার সহায় হলে তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান বলে আর্তি জানিয়েছেন। (Bangladesh Situation)

বাংলাদেশ জুড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা বিপন্ন বোধ করছেন। তাঁদের জীবন-জীবিকা-সম্পত্তি, কোনও কিছুই সুরক্ষিত নয় বলে অভিযোগ। এই আবহে কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়ে পার হওয়ার আগে চোখে-মুখে উৎকণ্ঠা হিন্দু পরিবারগুলির। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও দু’ দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও করছেন এপারে আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা। 

বাংলাদেশের নড়াইল জেলার বাসিন্দা খুকুরানি বিশ্বাস। ভারতে এসেছেন মায়াপুর যাবেন বলে। তাঁর কথায় উঠে এসেছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অবর্ণণীয় অত্য়াচারের প্রসঙ্গ। সংবাদমাধ্যমে খুকুরানি বলেন, “ওখানে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে, নামকীর্তন করতে দেয় না। ওখানে হিন্দুদের কোনও বাসস্থান থাকবে না। আর বলে, ‘মুসলিম রাষ্ট্র বানাব’। আমাদের হিন্দুদের কোনও পূজার্চনা চলে না, শঙ্খধ্বনি চলে না, ঢাকঢোল বাজাতে দেয় না। আমাদের পুজোর সময় এসে বাধা দেয়। আমরা খুব সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছি। ঘরের গ্রিলে তালা দিয়ে বসে থাকি।” (Minority Hindus in Bangladesh)

ভারতে আসা বাংলাদেশের হিন্দু নাগরকিদের অনেকেই দেশে ফিরতে গিয়ে দু’বার ভাবছেন।  বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা এক যুবক আতঙ্কে নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক। মা-বাবার চিকিৎসার জন্য় ভারতে এসেছিলেন। এরই মধ্যে আরও টালমাটাল হয়ে পড়েছে পরিস্থিতি। ঘর, বাড়ি, চাকরি তো বটেই, প্রাণ খোয়ানোরও আশঙ্কা করছেন তিনি।

এবিপি আনন্দকে ওই যুবক বলেন, “আমার নিজের পাশের জায়গায়, আমার নিজের চোখে দেখা, হাজারিগলিতে নৃশংস ভাবে অত্যাচার করছে মানুষকে। ইসকন নিয়েখারাপ প্রচার করা হচ্ছে, সেনা আসছে। রাতের বেলায় যাচ্ছেতাই ভাবে অত্যাচার করছে। এখন তো দেখছি চাকরি যাবেই, ঘরবাড়িও যাচ্ছে। নিজের প্রাণটা নিয়েও এখন ওখানে সুস্থভাবে থাকতে পারব বলে বিশ্বাস করতে পারছি না।”

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে ভারতে এসেছেন অধীর সেন ও রিনা সেন। আতঙ্ক-উদ্বেগ তাঁদের গলাতেও। অধীর বলেন, “সন্ধের পর দোকান খোলা রাখতে পারছি। যদি মোদি সরকার, ভারত সরকার আমাদের উপর সহায় হয় একটু, আমাদের দিকে যদি একটু ভাল দৃষ্টিতে তাকায়, তাহলে আমরা হিন্দুরা অন্তত নিরাপদে থাকতে পারব।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার সমস্ত হোটেলে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুব়্যান্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। 

আরও দেখুন



Source link

JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours