সেলিম রেজা, ঢাকা: দায়িত্ব নেওয়ার সাড়ে নয় মাসের মাথায় এসে বড় ফাঁড়ার মুখে পড়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি চতুর্দিকে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার চরম দ্বিধা ও সংকটের মুখে পড়ে। হঠাৎই পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তবে আপাতত তিনি পদত্যাগ করছেন না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোও গতকাল থেকে ফের এক গলায় কথা বলছে। তারা কেউ বাংলাদেশের সরকার প্রধানের পদত্যাগ চায় না। ড. ইউনূসের পদত্যাগে বাংলাদেশের সংকট দূর হবে না বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে অবস্থান সবার। তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সুরের এই ঐকতান কতোদিন থাকবে তা সময়ই বলে দেবে।
আরও পড়ুন- Breaking News Live Update: ‘দলীয় বিরোধীতা থাকলেও দেশের ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ’, অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে জাপানে বললেন অভিষেক…
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন, এই খবর সম্প্রতি সব মহলে ছড়িয়ে পড়ে। তা আরও স্পষ্ট হয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জুলাই বিপ্লবের অগ্রভাগে থাকা নেতা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষাতের পর। নাহিদ জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর এক সুর। এরপর ক্ষণে ক্ষণে উত্তেজনা ও শঙ্কার পারদ বাড়তে থাকে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের পদত্যাগ নিয়ে নানা খবর ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিতর্কিত উপদেষ্টাদের’ সরানোর দাবি তোলে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এর আগে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভও করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পদত্যাগে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্রদের সদ্য গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির এক শীর্ষ নেতা। এ ঘটনা পরিক্রমার মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে চাওয়ার গুঞ্জন চাউর হয়। ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না’- এমন খবরে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও জনমনে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তার ক্ষমতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের দরকার আছে।
আরও পড়ুন- Weather Update: শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ, সপ্তাহ শেষে ধেয়ে আসছে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি! হুড়মুড়িয়ে কমবে তাপমাত্রা…
এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে টেলিফোনে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ শঙ্কা কেটেছে। কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমি বুঝতেছি না কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো; কারা করছে। তবে অবারিত স্বাধীনতা থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেচ্ছ ব্যবহার করা কাম্য নয়। এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের বাইরেও। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্য গঠন করে ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সবার উচিত কমিশনকে সহায়তা করা। নইলে সংকট তৈরি হবে।
শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের সেনাপ্রধান বাংলাদেশের স্তম্ভ। আপনারা ব্যক্তিগত মান-অভিমানের কারণে মানুষের স্বপ্ন ফিকে হতে দেবেন না।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)