জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শেখ হাসিনা সরকার পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের উপরে বার বার হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলা হয়েছিল সংখ্যালঘুদের ধর্মস্থানেও। হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরবাড়ি, দোকানে হামলা চালানো হচ্ছে। পুড়ছে বাড়িঘর, চলছে ভাঙচুর, পিটিয়ে খুন, অবাধ লুঠপাট… এইসব নৃশংস, নির্মম, অমানবিক ঘটনার ইতিমধ্যেই সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আবেদন জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
আরও পড়ুন, Bangladesh: তিন জেলা এড়িয়ে চলার বিধান! বাংলাদেশ ভ্রমণে লাল সতর্কতা?
হামলা শুরু হয় মূলত গত ৫ আগস্ট বিকেল থেকে। প্রথম দুই দিন হামলার ঘটনা বেশি ঘটে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে, ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালিয়ে হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ১ হাজার ৬৮টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরেই এই আশঙ্কা জন্ম নেয় যে এবার কি তবে প্রতিবেশী দেশে বিপন্ন হবেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা? ধীরে ধীরে সেই আশঙ্কা সত্যি পরিণত হচ্ছে। নৈরাজ্যের বাংলাদেশে জারি রয়েছে ভাঙচুর, লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ।
সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগে। বিভাগটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ২৯৫টি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা হয়। রংপুর বিভাগে ২১৯টি, ময়মনসিংহে ১৮৩টি, রাজশাহীতে ১৫৫টি, ঢাকায় ৭৮টি, বরিশালে ৬৮টি, চট্টগ্রামে ৪৫টি এবং সিলেটে ২৫টি বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের উপরে যে হামলার ঘটনা ঘটেছিল তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিল সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি। সেইসময় বাংলাদেশ ন্যাশনাল হিন্দু গ্রান্ড অ্যালায়েন্সের তরফে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের ৪৮ জেলায় ২৭৮ জায়গায় হিন্দুদের উপরে হামলা হয়েছে। এটা হিন্দু সমাজের উপরে হামলা।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, নওগাঁয় চার্চ অব বাংলাদেশ, দিনাজপুরে ইভ্যানজিলিক্যা হলিনেস চার্চ, নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের কালেকশন বুথ এবং বরিশালের গৌরনদীতে তিনটি, খুলনা শহরে একটি, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে একটি ও পার্বতীপুরে একটি খ্রিষ্টান বাড়িতে হামলা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য বলছে, হাসিনার বিদায়ের পর সেদেশের ৫০টি-রও বেশি জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর দুশোরও বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। যদিও সপ্তাহখানেক আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার কমেছে, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, Muhammad Yunus | Gautam Adani: তাগাদা দিতেই খাপ্পা? ইউনূস প্রশাসন বলছে, আদানির বিদ্যুত্ প্রকল্প রিভিউ করা হবে!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)