সেলিম রেজা, ঢাকা: বাংলাদেশের ফরিদপুরে বাস উল্টে খাদে পড়ে বাবা-ছেলে-সহ ৭ জনের নিহতের ঘটনায় চালকের বেপরোয়া মনভাবকেই দুষছেন আহত যাত্রী ও পুলিস প্রশাসন। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুর যাচ্ছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত কয়েকজন যাত্রী জানিয়েছেন, বাসটি নগরকান্দা থেকে সকাল ১১টার কিছুক্ষণ পরে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সাধারণত নগরকান্দা থেকে ফরিদপুর আসতে এসব বাসের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে। তবে নগরকান্দা থেকে তালমা ১২ কিলোমিটার সড়ক তুলনামূলক চাপা। এজন্য এই সড়কে বেশ স্বাভাবিকভাবে চালিয়েই আসছিলেন চালক। তবে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ওই আঞ্চলিক সড়ক ছেড়ে যখন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ওঠেন। নগরকান্দার তালমার মোড় থেকে বাসটি মহাসড়কে ওঠে। তখনই বাসটি গতি বাড়াতে থাকে।
সেখান থেকে মহিলারোড এলাকায় আসলে বাসের গতি বাড়িয়ে অন্তত ৮০ কিলোমিটার বেগে চালান চালক। এ সময় বাসের ভেতরের যাত্রীরা চালককে নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি। বাসটি দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে এসে গতি আরও বাড়িয়ে সামনে একটি গাড়িকে দ্রুতগতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কের পাশে একটি পিলারে ধাক্কা খেয়ে খাদে পড়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে-সহ এখন পর্যন্ত ৭ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন-ভয়ংকর! রাস্তায় এ কী? পথচলতি মানুষের গলা কাঠ, হাড়হিম…
বাংলাদেশের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ওই বাসের যাত্রী বাধন সরকার (২৭) বলেন, একটা লোকাল বাস যে এত গতিতে চলতে পারে তা জীবনে দেখিনি। শুধুমাত্র দ্রুতগতির কারণেই আমাদের আজ এই মৃত্যু, হাসপাতাল ও আহতদের দেখতে হল। তিনি আরও বলেন, চালকের গতি দেখে আমরা বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করলেও তিনি আমাদের কথা শোনেননি।
বাংলাদেশের ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার নজরুল ইসলাম জি ২৪ ঘন্টাকে টেলিফোনে বলেন, বাসটি পেছনের দিক থেকে দ্রুত গতিতে আরেকটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কের পাশে একটি পিলারে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চালকের অতিরিক্ত গতির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমার মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন-‘মেরা জবান মেরা শাসন হে’, বীরভূমে ফের পুরনো মেজাজে অনুব্রত!
বাংলাদেশের ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা জি ২৪ ঘন্টাকে টেলিফোনে বলেন, নিহত প্রত্যেককে প্রশাসনের উদ্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও পরবর্তীতে বিআরটিএর মাধ্যমে এককালীন টাকা দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে। পরে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)