ধর্ষণে কঠোর শাস্তির দাবি, অপরাজিতা বিল এখনও আটকে, দ্রুত কার্যকর করতে রাষ্ট্রপতির কাছে তৃণমূল

কলকাতা: অপরাজিতা বিল কার্যকর করাতে এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল তৃণমূল। আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় সাড়া পড়ে যায় গোটা দেশে। এর পরই রাজ্য বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী ‘অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড বিল ২০২৪’ পেশ হয়। বিধানসভায় বিল পাস হওয়ার পর তা এখন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই নিয়েই লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। (Aparajita Bill)
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তৃণমূল সাংসদদের ১১ জনের প্রতিনিধিদল। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ ব্রায়েন ছাড়া দলে তৃণমূলের নয়জন মহিলা সাংসদ। এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি-ও চায় কঠোর শাস্তি হোক। যেখানে সরকারই প্রমাণ লোপাট করছে, সেখানে কঠোর আইনের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।” (Droupadi Murmu)
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার সময় সুদীপ বলেন, “সর্বসম্মতিতে বিধানসভায় অপরাজিতা বিল পাস হলেও, সেই বিলে অনুমোদন আসছে না। বিলম্ব হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাষ্ট্রপতির কাছে মহিলা সাংসদদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। অনুরোধ জানাব, নিশ্চিত ভাবে মৃত্যু অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, দোষী এবং ধর্ষকদের এই ধরনের শাস্তিপ্রদানের ক্ষেত্রে এই বিলের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে রাজ্য।”
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সুদীপ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গত ৩ সেপ্টেম্বর সর্বসম্মতিতে ধর্ষণ বিরোধী অপরাজিতা বিল পাস হয়। বিরোধীরাও বিলে সমর্থন দেন। কিন্তু বিলটিতে অনুমোদন মিলছে না রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সাক্ষাৎ করতে আসি। বিলের বিশদ তথ্য তুলে ধরেছি। যাবজ্জীবন এবং ফাঁসির সাজার দাবি জানিয়েছি। রাষ্ট্রপতি ধৈর্যের সঙ্গে শুনেছেন আমাদের কথা। তিনি উদ্বিগ্ন বলেও মনে হয়েছে আমাদের। বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।”
দলের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের তরফে ১১ জনের প্রতিনিধি দল গিয়েছিলাম রাষ্ট্রপতির কাছে। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিল পাস হলেও, এখনও রাষ্ট্রপতির কাছে বিলটি পড়ে রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিলটিতে অনুমোদন দিতে আর্জি জানিয়েছি রাষ্ট্রপতিকে।”
যদিও শমীকের বক্তব্য, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। নির্ভয়া আইন তো ছিলই। আরও একটা কঠোর আইন নিয়ে এসেছে। আমরাও তার সমর্থক। অপরাধীরা কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি পাক অপরাধীরা। কিন্তু যেখানে সরকার নিজেই দায়িত্ব নিয়ে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে প্রমাণ লোপাট করে দিচ্ছে, সেখানে আইনের মূল্য কী থাকবে? সরকারই তো প্রমাণ লোপাট করছে। তাই যতই কঠোর আইন আনা হোক না কেন, সেটা বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়।”
তৃণমূল নেতাদের মতে, এত কঠোর আইন করা হয়েছে। অপরাজিতা আইনকে মডেল করে তোলা হোক গোটা দেশে, যাতে নৃশংস অপরাধ ঠেকানো যায়। কেন এতদিন বিলটিতে অনুমোদন দিতে এত দেরি হচ্ছে, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
আরও দেখুন