জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আহত সবচেয়ে কম বয়সী যাত্রী ৮ মাস বয়সী একটি শিশু ধ্যানশ্, যার শরীরের ২৮% পুড়ে গেছে অভিশপ্ত বিমানে। ১২ জুন যখন AI-171 আহমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজের আবাসিক কমপ্লেক্সে ভেঙে পড়ে , শিশুটি তাঁর মা, মনীষা কাছাদিয়ার সঙ্গে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মেডিকেল কলেজের একটি ঘরে ছিল।
এই দুর্ঘটনায় দুজনেই পুড়ে গিয়ে আহত হন, ২৭০ জন মারা যান (দুর্ভাগ্যবশত বিমানে ২৪১ জন এবং আশেপাশে ২৯ জন)। শিশুটির ২৮ শতাংশ পুড়ে যায় এবং তাকে আহমদাবাদের সিভিল হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) ভর্তি করতে হয়।
অগ্নিদগ্ধ ৮ মাসের শিশু:
দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও শিশুটি এখনও পিআইসিইউতে রয়েছে যেখানে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, ধ্যানশের বাবা কপিল কাছাদিয়া বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন। কপিল কাছাদিয়া বিজে মেডিকেল কলেজে ইউরোলজিতে তার সুপার-স্পেশালিটি এমসিএইচ ডিগ্রি কোর্স করছেন। লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ওড়ার কিছুক্ষণ পরপরই যখন ভেঙে পড়ে তখন তিনি ওই হাসপাতালে ছিলেন।
দুর্ঘটনার তীব্রতা এবং পরবর্তী আগুন এতটাই ছিল যে, একটি ফ্ল্যাটের ভিতরে থাকা সত্ত্বেও, তাপের কারণে তার স্ত্রী মনীষা পুড়ে যান, যিনি একজন হোমিওপ্যাথ। এবং ছেলে ধ্যানশ। মনীষা বর্তমানে হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: Gopalpur Shocking Incident: গা ছমছম গোপালপুর অন সি! প্রেমিকের হাত-পা বেঁধে নির্জন সৈকতে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর শরীরে ১০ বর্বর…
সবচেয়ে বড় বিমান বিপর্যয়:
ভারতের উড়ান ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার আমদাবাদের মেঘানিনগরে টেক অফের ২ মিনিটের মধ্যেই ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI 171। একজন ছাড়া বাকি সব যাত্রীর মৃত্যু হয়। সেই একজনই বিশ্বাসকুমার রমেশ। AI-171-র 11A সিটের যাত্রী ছিলেন তিনি। বলা হচ্ছে, 11A সিটে বসে থাকার সুবাদেই তিনি আশ্চর্যজনকভাবে এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান।
বৃহস্পতিবার আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে প্লেন ওঠার কিছু সময়ের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এই বিমান। দুপুর ১.১৭ মিনিটে বিমানটি টেক অফ করে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (SVPIA) থেকে। বিমানে যাত্রী ছিলেন ২৪২ জন। লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এই ফ্লাইটটি। মোট ২৪২ জন নিয়ে উড়েছিল সেটি। এতে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, ৭ জন পোর্তুগিজ, একজন কানাডাবাসী। তার মধ্যে মাত্র একজন যাত্রীই ভাগ্যের জোরে বেঁচে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Meghalaya Honeymoon Murder: ‘সোনমকে এখনই এনকাউন্টারে মেরে ফেলা উচিত! ও বেঁচে থাকলেই…’ ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজের দাদা…
বিজে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ধাক্কা মারে বিমানটি:
টেক অফ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ধাক্কা মারে বিমানটি। এয়ারপোর্ট সংলগ্ন ডাক্তারদের সেই হস্টেলে ধাক্কা মারার জেরেই মৃত্যু হয়েছে বেশ কিছু আবাসিক চিকিত্সকের। দুর্ঘটনার সময় সেই হস্টেলে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৫০ জন। আরও জানা যায়, যে সময় বিমানটি হোস্টেলে ধাক্কা মারে, সেই সময় মধ্যাহ্নভোজে ব্যস্ত ছিলেন ডাক্তাররা। আচমকাই বিল্ডিংয়ে ঢুকে আসে বিমান।
এখনও অবধি ২৭৫ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ওড়ার পরপরই পাইলট আমদাবাদ বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রককে ‘মে’ডে নামক একটি বিপদের বার্তা পাঠান। তবে, এরপর, এটিসি-র করা ফোনের কোনও জবাব বিমানটি দেয়নি।
কালো ধোঁয়ার একটি বিশাল কুণ্ডলী:
বোয়িং বিমানটি দ্রুত মেঘের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছিল,আর তারপরই বিমানবন্দরের কাছে মেঘানীনগর এলাকায় ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার পরপরই এলাকা থেকে কালো ধোঁয়ার একটি বিশাল কুণ্ডলী দেখা যায়। জরুরি উদ্ধারকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং ব্যাপক উদ্ধারকার্য এখনও চলছে। অগ্নিনির্বাপণ অভিযান শুরু করেছে। বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে শহরের সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)