নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার দুপুরে আমদাবাদে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। এরপরই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এক যাত্রীর পোস্ট। যেখানে তিনি দাবি করেন, ভেঙে পড়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে তিনি ওই বিমানে ছিলেন। ভিডিও পোস্ট করে, বিমানে নানা অব্য়বস্থার অভিযোগ তোলেন আকাশ বৎস নামে ওই যাত্রী।
আরও পড়ুন, প্রশ্নের মুখে সেফটি ইস্যু, বিমান দুর্ঘটনার পর DGCA-র বড় সিদ্ধান্ত , কবে থেকে কী কী পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হতে চলেছে ?
স্বপ্নের ড্রিমলাইনারই বৃহস্পতিবারের পর হয়ে উঠেছে দুঃস্বপ্নের আরেক নাম! আমদাবাদের ভয়াবহ বিপর্যয়ে নিমেষে শেষ হয়ে গেছে ২৬৫টা প্রাণ। উদ্ধারকারী দলের সদস্য বলেন, চিনতেই পারছিলাম না। যে এরা আমাদের সহকর্মীরা। চিনতেই পারছিলাম না। একটা টুকরো এদিকে। আরেকটা টুকরো ওদিকে। বোয়িং ড্রিমলাইনারকে সবাই বেছে নেন মূলত দু’টো কারণে। নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্য়। কিন্তু বোয়িংয়ের সেই অত্য়াধুনিক বিমান, ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার এরকম ডেডলি হয়ে উঠল কীকরে?
বিশ্বের বড়বড় এয়ারলাইন্স যে ড্রিমলাইনার ব্য়বহার করে, যা এর আগে কোনওদিন ভেঙে পড়েনি তাই এভাবে ধ্বংস হয়ে গেল কী করে? এই প্রশ্ন যখন জোরাল হচ্ছে, তখনই বৃহস্পতিবার সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটা ভিডিও। যেখানে আকাশ বৎস্ নামে এক যাত্রী, দাবি করেন, আমদাবাদ থেকে ওড়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে তিনি ওই বিমানেই ছিলেন। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে, বিমানে নানা অবস্থার অভিযোগ তোলেন তিনি।তিনি বলেন, এটা ড্রিমলাইনার ৭৮৭। প্রচণ্ড ঘামছি। ১৫ মিনিট এভাবেই রয়েছি। কিছুই করা হচ্ছে না। কোনও কিছু কাজ করছে না। জানি না, কেন এই বিমানে টিকিট কাটলাম।
আড়াই তলার যে বিমান তার স্টেট অফ দ্য় আর্ট সজ্জার জন্য় পরিচিত, সেখানে এই হাল! সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ওই ভিডিওতে আকাশ বৎস নামে ওই বিমান যাত্রী তার ভয়া অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘বিমানে এসি কাজ করছে না। অনেকে ম্য়াগাজিন দিয়ে হাওয়া করছে। এসি কাজ করছে না। স্ক্রিনও কাজ করছে না। কেবিন ক্রু-দের ডাকার এই বাটনগুলোও কাজ করছে না। আলোও জ্বলছে না। এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে আমাদের। এই জন্য়ই এয়ার ইন্ডিয়াকে জঘন্য় উড়ান সংস্থাগুলোর একটা বলে ধরা হয়। এখনও এসি কাজ করছে না। আজ দিল্লিতে ভীষণ গরম।’
ড্রিমলাইনার ৭৮৭-এ যেদিন ভারতের অন্য়তম ভয়াবহ বিপর্যয়টা ঘটল সেদিন ভাইরাল হওয়া ড্রিমলাইনারের যাত্রীর এই ভিডিও বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেয়। আকাশ বৎস নামে যে যাত্রী এই ভিডিও তুলেছিলেন, তিনি শুক্রবার সংবাদমাধ্য়মের সামনেও মুখ খোলেন। সংবাদ সংস্থা ANI-কে ড্রিমলাইনারে চড়া যাত্রী আকাশ বৎস্ জানিয়েছেন, আমি দিল্লি থেকে বিমানে উঠেছিলাম। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ছিল। যেটা গতকাল দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। আকাশে ওঠার পর আমি জানলা দিয়ে দেখি, একটা অংশ বারবার নীচে যাচ্ছে। পরে AC চালু হলেও বারবার অন-অফ হচ্ছিল। কখনও ঠাণ্ডা কখনও গরম।
শুধু একজন নয়। ড্রিমলাইনারের অবস্থা নিয়ে অভিযোগ করেছেন আরও অনেকে। অতীতে এই সেভেন এইট সেভেন ড্য়াশ এইট ড্রিমলাইনার বিমানে চড়া যাত্রীদের অভিযোগ, তখনও অভাব ছিল রক্ষণাবক্ষণের। বিমানযাত্রী অনুরাগ হালদার বলেন, বোয়িং 787-8 ড্রিমলাইনার বলে যেটাকে, আমি সেই বিমানে করেই দিল্লি থেকে মেলবোর্ন এসেছিলাম। খুবই মেনটেনেন্সের অভাব ছিল এই এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের থেকে। এবং বারবার এই এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষের উপর বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উঠেছে তাদের মেনটেনেন্স নিয়ে, তাদের নামে বিভিন্ন রকমের নোটিস ইস্যু করেছে DGCA।যে বিমানের সঙ্গে শয়ে শয়ে যাত্রীর জীবন জড়িয়ে, সেখানে এরকম অভিযোগ উঠবে কেন? যাত্রীদের চড়া দামে টিকিট বিক্রি করে, তারপর রক্ষণাবেক্ষণে সঙ্গে আপসের অভিযোগ উঠবে কেন?