সোমা মাইতি: রাজ্যসভার সাংসদের পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন জহর সরকার। এনিয়ে তিনি চিঠিও লিখেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। চিঠিতে তিনি তাঁর ক্ষোভের কারণ হিসেবে তিনটি বিষয় তুলে ধরেছেন-দুর্নীতি, নেতা-আমলাদের দাপট এবং আরজি কর কাণ্ড। জহরে ওই চিঠিতে হইচই পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এনিয়ে এবার মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী।
আরও পড়ুন-সাংসদপদ ছাড়বেন, ছেড়ে দেবেন রাজনীতিও! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’পাতার দীর্ঘ চিঠি দুঃখী জহর সরকারের…
জহর সরকারের ইস্তফা নিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃনমূলের তিনজন সাংসদ, সুখেন্দুশেখর রায়, শান্তনু সেন ও জহর সরকারকে প্রতিবাদ করতে দেখেছি। এরা সকলেই রাজ্যসভার সদস্য। এর মধ্যে সুখেন্দুশেখর বা জহরবাবুর কতদিনের ট্রাম আছে জানি না, তবে তাদের এই ভূমিকা দেখে আমার প্রশংসা করতে ইচ্ছে করছে। একটা পার্টিতে থেকে তার বিরোধিতা করা, বাংলার মা বোনেদের আন্দোলনের সমর্থন করা, আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করা নিশ্চয় প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এ বাংলায় যারা ক্ষমতাধারী তাদের মধ্যে এই প্রতিবাদের কোন রকম প্রতিফলন হবে কিনা তা নিয়ে আবার সন্দেহ আছে। গণ্ডারের যেমন চামড়া মোটা হয়, কিছু ভেদ করে না, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদেরও তাই অবস্থা। আজ পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর একবার মনে হল না আন্দোলনরত ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করা বা আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করা দরকার? তা তিনি করলেন না। ১৪ তারিখ রাত দখলে বাংলায় ২ থেকে আড়াই কোটি মানুষ সামিল হয়েছিলেন। সব কিছুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী কি করে এই ভাবে অভেদ্য অবস্থায় থাকে তা ভেবে আমার অবাক লাগছে।
জহর সরকার জানিয়েছেন তিনি ইতিমধ্য়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তিনি রাজ্যসভার সাংসদপদ থেকে ইস্তফা দেবেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, আরজি কর নিয়ে তিনি খুবই মর্মাহত। জানিয়েছেন, কয়েকজন নেতার ও আমলার দাপট আর তার সূত্রে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ নিয়ে তিনি খুবই অস্বস্তিতে। একটি দুপাতার চিঠিতে তিনি দুর্নীতির কথাও লিখেছেন। তবে বিভিন্ন কারণের মধ্যে মূলত আরজি কর কাণ্ডের কথাই তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আর রাজনীতিতেই থাকতে চান না, তা-ও জানিয়েছেন। তিনি কেন রাজ্যসভার সাংসদপদ ছাড়ছেন, তার যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, তেমনই তিনি যে রাজনীতিতেও থাকতে চান না, ব্যাখ্য়া করেছেন তার কারণও।
জহর সরকারের ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, জহর সরকার যে উদ্বেগ ও বক্তব্য রেখেছেন তার স্পিরিটের সঙ্গে আমি সহমত। কিন্তু তাঁর পথ তিনি ঠিক করে নিয়েছেন। কিন্তু আমরা যারা তৃণমূল কংগ্রেস করি তারও তাঁর উদ্বেগের সঙ্গে সহমত। এই অবস্থায় লড়াইটা আমরা দলের মধ্যে থেকে চালাতে চাইছি। দলের যদি কোনও ভুল থাকে তাহলে দল এমন কোনও পদক্ষেপ করুক যাতে মানুষ সন্তুষ্ট হন। মানুষ তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছেন, ভবিষ্যতেও আস্থা থাকবে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)