জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আর জি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিত্সকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে চিকিত্সকদের নিরাপতার ব্যবস্থা করতে একগুচ্ছ নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই মামলার শুনানিতে চাঞ্চল্যকর দাবি রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বলের। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে তিনি সওয়াল করেন, আরজি করের চিকিত্সকের মৃত্যু ঘটনায় রাজ্য সরকারের হয়ে মামলা লড়ায় তাঁর মহিলা সহকারীদের অ্যাসিড হামলা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন-কলকাতার নতুন পুলিস কমিশনারের পদে ‘চমক’ মমতার! বিনীত চললেন কোথায়?
কপিল সিব্বল আরও বলেন, আরজি কর মামলার লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করুন। কারণ এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এই মামলায় যারা জড়িত তাদের স্বার্থের সঙ্গে এই মামলায় জড়িত। কপিল সিব্বলের ওই কথায় গুরুত্ব দেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। কিন্তু তিনি বলেন, লাইভ স্ট্রিমিং সাধারণ মানুষের জন্য। তবে আইনজীবীদের নিরাপাত্তার বিষয়টিতে কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে।
সিব্বলের দাবি, লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের তরফে যারা আইন লড়াই করছে তাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ওই মামলায় যখন আদালত কোনও মন্তব্য করছে তখনই অভিযুক্তদের পক্ষে লড়াই না করলেও সেই মন্তব্য আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আমাদের সুনাম রাতারাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, সিব্বলের ওই সওয়াল শুনে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ হবে না। এটা জনসাধারণের জন্য করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির ওই কথা শুনেও সিব্বল বিষয়টি ফের বলেন, মহিলা সহকর্মীদের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আদালতে তাঁর কাজকর্মেরও ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ওই কথা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, হুমকির বিষয়টি আদালত গুরুত্ব দিচ্ছে। এনিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।
উল্লেখ্য, এদিন শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টে উঠল ‘রাত্রির সাথী’ প্রকল্পের কথা। “রাতের ডিউটি কম করবেন মহিলারা, এমন বিজ্ঞপ্তি মানা যাবে না। মহিলারা নাইট শিফট করবেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের।” স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিন আদালতে এক আইনজীবী সওয়াল করেন,”রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মহিলা চিকিৎসকরা ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না। রাতে ডিউটি কম ও না করানোর কথা বলা হয়েছে। এর বিরোধিতা করছি। এটা চিকিৎসকরা মেনে নিচ্ছেন না।”
ওই কথার উত্তরে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, “এটা কী করে হতে পারে? এই ধরণের বিজ্ঞপ্তির অর্থ কী? এটাও তো মহিলা চিকিৎসকদের প্রতি বৈষম্য! মহিলা চিকিৎসকরা বিশেষ কোনও সুবিধা চাননি। মহিলা চিকিত্সকরা সব পরিস্থিতিতেই কাজ করতে সমানভাবে ইচ্ছুক। তাঁরা সুরক্ষা চেয়েছেন। তাঁরা যেন সব পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে। রাজ্য সরকারকে এটা সুনিশ্চিত করতে হবে। তুমি এটা বলতে পার না যে মহিলা চিকিত্সকরা ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না বা রাতে কাজ করবেন না। সশস্ত্র বাহিনীও রাতে কাজ করে। সেখানেও মহিলারা আছেন। মহিলারা কোনও ছাড় চান না, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে সমানাধিকার চান। ডিউটির সময় সবার ক্ষেত্রে সমান হওয়া উচিত। রাজ্য সরকার নারী-পুরুষে কোনও ভেদ করবে না এটা সুনিশ্চিত করতে হবে।”
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
+ There are no comments
Add yours