অনির্বাণ বিশ্বাস, অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় ও ঐশী মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: ‘পোস্টে’ অভিষেকের ‘প্রত্য়াবর্তন’ ! জোর নিশানা বিজেপি নেতা তাপস রায়ের। এদিন বিজেপি নেতা তাপস রায় কটাক্ষ বলেন,’অভিষেক চৌরঙ্গি-জোড়াসাঁকো নিয়ে বলছে, ভবানীপুর নিয়ে কেন বলছে না। ফের পিসি-ভাইপোর নাটক শুরু হয়েছে। কলকাতা উত্তরে ২৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল হেরেছে, ভবানীপুর যেন রক্ষা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
কোনও পোস্টে লেখা, অভিষেককে মানুন। ED, CBI-এর ভয়ে গদ্দার , শুভেন্দুর সঙ্গে লুকায়িত সম্পর্ক ছাড়ুন…! কোথাও আবার লেখা হয়েছে,আগামীকে মানতে হল। কেউ লিখেছেন, আগামীকে মানতে হবে অধিনায়ক অভিষেক ব্য়ানার্জি জিন্দাবাদ। শনিবার ভুতূড়ে ভোটারের প্রসঙ্গ ছাড়িয়ে, কার্যত ছাব্বিশের লড়াইয়ের ব্লু প্রিন্ট এঁকেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।ফের একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন পারফরমেন্সই শেষ কথা।আর এরপর থেকেই সোশাল মিডিয়াজুড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিয়ে একের পর এক পোস্ট সামনে আসছে। কেউ লিখছেন, আজকে যা বুঝলাম আগামীকে মানতেই হবে আগামী তৈরি!এন্ট্রিটা কেমন হল নামটা মনে রাখবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেউ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, পোলা তো নয় আগুনের গোলা। কেউ লিখেছেন, ওদের বলে দিও, ফ্যাম আগেই বলেছিল ‘আগামীকে মানতে হবে’জয়তু অধিনায়ক।
বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা ও ওয়েবকুপার প্রাক্তন সহ সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল লিখেছেন, অভিষেক ব্যানার্জি জিন্দাবাদ। তৃণমূল কংগ্রেস আইটি সেল প্রধান বলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, তৃণমূলের নবীণ প্রজন্মের মুখে যখন একথা, তখন প্রবীনরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কৃতিত্ব স্বীকার করেও বলছেন, শেষকথা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ই। তৃণমূল বিধায়ক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন,’মানা আর অমানার ব্যাপার নয়। সবাইকে নিয়ে আমরা চলছি। সবাই একসাথে রয়েছি। কারণ সবার মাথার উপরে মমতাদি আছে। অভিষেকের সেনা মানেই তো তৃণমূলের সেনা। কারণ মমতাদির এবং অভিষেক তারা তো তৃণমূলই।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতে ও শেষে অত্য়ন্ত ইঙ্গিতপূর্ণভাবে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ‘আমাদের সবার নেতা’ বলে সম্বোধন করেন তৃণমূলের রাজ্য় সভাপতি সুব্রত বক্সী।তৃণমূল নেতা ঋজু দত্ত বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় আমাদের দলের সেনাপতি। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মিটিং মিছিল জনসভা করার দরকার নেই এটা বোঝানোর জন্য যে সংগঠনের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে আছে। তিনি পিছন থেকে পুরোটাই দেখছিলেন। যখন ২৭ ফেব্রুয়ারি দলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ভূতুড়ে ভোটারের যে লিস্ট প্রকাশ করেছিল আপনাদের কী মনে হয় তার পিছনে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বা আই প্যাকের অবদান নেই? বিরাট অবদান আছে।
তৃণমূল বিধায়ক ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, যোগ্য ছেলে। এ ব্যাপারে তো কোনও সন্দেহ নেই। ও কাজের ছেলে। মমতাই আমাদের শেষ কথা বলবেন। তারমধ্যে সংগঠক যারা আছেন, তাদের মধ্যে অভিষেক অন্যতম শ্রেষ্ঠ। দল তো নিশ্চয়ই অভিষেকের মধ্য়ে কিছু পেয়েছে। নিশ্চয়ই তার জন্য সামনে এনেছে এবং সত্যি কালকে ২ ঘণ্টা ধরে বক্তব্য রেখেছে। অসাধারণ। ফেব্রুয়ারি মাসে পরিষদীয় দলের বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বুঝিয়ে দেন, দলের রাশ তাঁরই হাতে রয়েছে।
এদিকে শনিবারের পর সোশাল মিডিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে যেসব পোস্টের স্রোত বইছে, তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, চোরেদের দলের কে নেতৃত্ব দেবে এটা নিয়ে কোন চোর নেতৃত্ব দেবে সেটা নিয়ে কি খুব বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন আছে? আমাদের যেমন পদ্ধতি একই থাকে কন্টিনিউয়াস পদ্ধতি। তৃণমূলেরও পদ্ধতি এক। নেতা যেই হোক। চুরি তো করতেই হবে। চুরিটা হচ্ছে ইউনিভার্সাল ট্রুথ ওদের ক্ষেত্রে। তো চুরি করার জন্য যে নেতাই বসুক চুরি করবে। অসুবিধা কী আছে?
আরও পড়ুন, BJP-র পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে? বৈঠকে মালব্যরা, জল্পনা তুঙ্গে..
গতবছর জুন মাসে, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যখন দিল্লি-মুম্বইয়ে , অখিলেশ যাদব থেকে উদ্ধব ঠাকরের মতো INDIA জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন কলকাতায় দেখা যায় এই পোস্টার!যেখানে ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ছবি। পাশে বড় বড় করে লেখা, ‘দ্য গেম চেঞ্জার দাদা।’আর জি কর কাণ্ডের সময় যখন চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশাসনে চেয়ে এমন একাধিক পোস্ট দেখা যায়।বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর, সোশাল মিডিয়া জুড়ে ফের পোস্টের ছড়াছড়ি।
আরও দেখুন