জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নাম তার মেগা বার্গ! বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গ, সবচেয়ে প্রাচীনতমও। বহুদিন ধরেই এই হিমশৈল খবরে। তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে সাম্প্রতিকতম খবরটি হল দৈত্যাকার এই হিমশৈলটি ব্রিটেনের প্রত্যন্ত দ্বীপ সাউথ জর্জিয়ার অগভীর জলে আটকে গিয়েছে! আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বীপের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ ঘটবে এবং এতে এ অঞ্চলে বিচরণকারী লাখ লাখ পেঙ্গুইন ও সিলের মতো প্রাণীগুলি প্রাণসংশয় বা ওই জাতীয় ঝুঁকিতে পড়বে। ‘এ২৩এ’ নামের এই হিমশৈল আকারে গ্রেটার লন্ডনের দ্বিগুণ। অগভীর জলে আটকে থেকে একসময়ে এটি টুকরো হয়ে ভেঙে যাওয়াও শুরু করতে পারে।
আরও পড়ুন: Kusuma Nain: প্রকাশ্য দিনের আলোয় নৃশংস খুন ১৪ ‘শত্রু’কে! চোখ উপড়ে নিতেন, শিকলপেটা করতেন, জ্বালিয়ে দিতেন গ্রাম…
সমুদ্রবিষয়ক গবেষক মার্ক বেলচিয়ার বলেছেন, হিমশৈলটি ভেঙে গেলে বিশাল বিশাল সব বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে জলযানগুলির সামনে বিপদ তৈরি করতে পারে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা, হিমশৈলটি টুকরো হয়ে গেলে এ অঞ্চলে মাছশিকারের সময় বিশাল আকারের সব বরফ-চাঁইয়ের মোকাবিলা করতে হতে পারে তাঁদের। আবার উল্টো কথা বলছেন অ্যান্টার্কটিকার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, হিমশৈলটির বরফে বিপুল পরিমাণ পুষ্টি উপাদান জমে আছে, তাই এটি গলতে শুরু করলে মহাসাগরে প্রাণের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে!
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
এ২৩এ ১৯৮৬ সালে প্রথম আন্টার্কটিকার ফিলচনার আইসশেলফ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। পরে আবার এটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকে পড়ে। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ডিসেম্বরে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে গলতে শুরু করে। তবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিয়ত এটির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ‘এ২৩এ’ দৈনন্দিন গতি-প্রকৃতির উপর সদাজাগ্রত নজর রাখা এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাদির বিশ্লেষণও চলছে। আন্টার্কটিকার উত্তর দিকের উষ্ণ জলরাশি হিমশৈলটিকে গলিয়ে দিচ্ছে। একসময় হিমশৈলটির আকার ছিল ৩৯০০ বর্গকিমি। সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা গিয়েছে, এটি ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে, বর্তমানে এর আকার কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২৩৪ বর্গকিমি।
এরই মধ্যে হিমশৈলটির কিনার থেকে বড় বড় বরফখণ্ড ভেঙে সমুদ্রে পড়তে শুরু করেছে। যে কোনো দিন পুরো হিমশৈল বড় বড় খণ্ডের আকারে সম্পূর্ণত ভেঙে পড়তে পারে। এগুলি সাউথ জর্জিয়ার আশেপাশে বছরের পর বছর ধরে এক ‘তুষারনগরী’ হয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে।
আরও পড়ুন: তীরের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে ১৯৫ কিমি বেগে ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়! হতে পারে বন্যা, দেশ জুড়ে ‘লকডাউন’…
সমুদ্রজলের উষ্ণতা ও বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে আন্টার্কটিকার সামগ্রিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও বেশি অস্থির ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। মনে করা হচ্ছে, এরকম পরিস্থিতিই চললে ভবিষ্যতে এরকম আরও অনেক হিমশৈল ভেঙে পড়তে পারে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)