জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার, কেহ নাহি দিবে অধিকার… হে বিধাতা?’- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো কবেই বলে গিয়েছিলেন এই অমোঘ বাণী। কিন্তু প্রদীদের তলাতেই যে অন্ধকার, তা কে না জানে?কিছুদিন আগেই উদযাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর অধিকার থেকে নারীর জীবন, নারীর জন্ম থেকে সাফল্য- আলোচনা, সেমিনার, অনুষ্ঠান, ভাষণ কোনকিছুই বাদ যায়না নারী দিবসে। আর সেই সঙ্গে সারা বছর জুড়েই ঘটে চলে কন্যাভ্রূণ হত্যা আর নারীর উপর অত্যাচার, পণ-প্রথা আর বধূ নির্যাতনের মতো সামাজিক ব্যাধিগুলো। সম্প্রতি যোগ হল এরকমই আরেকটি ঘটনা।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
রাজস্থানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। আবারও কন্যা সন্তান হত্যা। অশোক যাদব তার পাঁচ মাস বয়সী যমজ কন্যাকে মেঝেতে মাথা থেঁতলে হত্যা করল। ছেলে হয়নি কেন, শুধু এই রাগ থেকেই এই নৃশংস ঘটনা বলেই মামলা করা হয়েছে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: স্তন খামচে সালোয়ারেরর দড়ি ছিঁড়েছে, তো! এটা মোটেই ধর্ষণ নয়: হাই কোর্ট
পুলিশের মতে, অভিযুক্ত অশোক, তার পরিবারের মদতে স্ত্রী অনিতাকে যমজ কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য সবসময় কটূক্তি করতেন। ২৭মার্চ, এই নিয়ে বাড়িতে আবারও ঝগড়া হয়। স্ত্রী অনিতা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন- ঘটনার দিন,অনিতা মেয়েদের খাওয়াচ্ছিলেন। ঠিক তখনই শাশুড়ি ঘরে ঢুকে তাঁকে পুত্র সন্তান কেন হয়নি এই নিয়ে বকাবকি করতে শুরু করেন। অনিতার স্বামী একটু পরে এসে ঘরে ঢুকে মায়ের সঙ্গ দেয়। বিভিন্ন ভাবে চিৎকার করতে কটূক্তি করতে থাকে। যখন তার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞাসা করে যে, মা হিসেবে তাঁর কী করা উচিত? তখন অশোক বলেন যে তিনি সমস্যার সমাধান করবেন। এক মেয়েকে ধরে তাঁর মাথাটা হঠাত্ মেঝেতে ঠুকে দিলেন। স্ত্রী চিৎকার শুরু করলে, তিনি অন্য মেয়ের সঙ্গেও একই কাজ করেন। অনিতা সাহায্যের জন্য ডাকতে দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
আরও পড়ুন: অস্ত্র নয়া আয়কর আইন, আপনার হোয়াটসঅ্যাপ আর মেইলে চালু সরকারি নজরদারি!
পুলিশ জানিয়েছে, এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অনিতার বোনকে ফোন করে কারণ সে একই কলোনিতে থাকে। অনিতার বোনকে জানানো হয়, শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে, সে সময় তাঁকে থাকতে হবে যময দুটি বাচ্চার সঙ্গে। শিশুরা তাদের বাবার কোল থেকে পিছলে পড়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয় অনিতার বোনকে। সেই সন্ধ্যায় যখন অনিতার জ্ঞান ফিরে আসে, তখন তিনি শোনেন, তাঁর সন্তানরা আর বেঁচে নেই এবং তাদের কাছেই কবর দেওয়া হয়েছে।
এর পরেই অনিতা এবং তার পরিবার পুলিশে খবর দেয়। সিকার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রোশন মীনা বলেন যে অশোককে সেই রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিস। একটি লেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল মৃতদেহ এবং একটি কবর দেওয়া হয়েছিল। মৃত শিশুদের বাবার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আরও তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তের পরিবারের অন্যদের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)