কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত। আদালতকে সম্মান জানালেও, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আদালতের এই রায় মানতে পারছেন না তিনি। আর সেই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, অধুনা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিশানা করেছন মমতা। (Mamata Banerjee)
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন, আর সেখানেই অভিজিৎকে নিশানা করেন তিনি। মমতা বলেন, “হাইকোর্টের এই রায়টা যিনি দিয়েছিলেন, তিনি এখন বিজেপি-র সাংসদ। বিচারব্যবস্থা ছেড়ে সাংসদ হয়েছেন, গাঙ্গুলি, না ডাংগুলি। আমি ঠিক আসল নাম জানি না, পরে জেনে নেব, সরি। ঠিক মতো নাম জানি না। আজ তাঁরা কোন মুখে বড় বড় কথা বলেন। তাঁদের দায়বদ্ধতা নেই!” (Abhijit Gangopadhyay)
যদিও অভিজিৎকে নিশানা করা নিয়ে মমতাকে একহাত নেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আজকের দিনে সবচেয়ে কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা জানাব অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে, যিনি চাকুরিজীবনের কয়েকটা মাস ছেড়ে দিয়ে, মোদিজির সৈনিক হিসেবে তৃণমূলের চ্য়ালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন। তৃণমূল বলেছিল, ‘ঠান্ডা ঘরে বসে অনেক কিছু হয়, আসুন ময়দানে দেখা হবে’। তিনি ময়দান বেছে নিয়েছিলেন তাম্রলিপ্তর মাটিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের সংগ্রামী মাটিকে। ধন্য যে আমরা তাঁকে জিতিয়েছি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভোট দিয়ে আমি আঙুলে কালি লাগাতে পেরেছিলাম, আমি কৃতার্থ। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পদত্যাগ, তাঁর মন্ত্রিসভার গ্রেফতারিই সমাধান।”
চাকরি বাতিল হওয়া নিয়ে এদিন সরাসরি মমতাকে দায়ী করেন সুকান্ত। অযোগ্যদের জন্যই যোগ্যদের চাকরি গিয়েছে বলে যেমন দাবি করেন, সেই সঙ্গে ২৬ হাজার চাকরি চলে যাওয়ার জন্য মমতাকে দায়ী করেন। সেই নিয়ে মমতা বলেন, “এত মানুষের চাকরি পাওয়ার পর বিজেপি-র মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলছেন, সরি আমি ওঁর নাম নিতে চাই না। আমি দেখেছি। বলেছেন, অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের চাকরি গিয়েছে, তার জন্য না কি আমি দায়ী! তা আপনারা যখন মামলা করলেন, একবারও ভাবলেন না কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য! সেটা সরকারকেও ভাবতে দিলেন না। আপনারা নিজে যোগ্য তো? সবসময় বাংলাকে কেন নিশানা করা হবে? বাংলার ছেলেমেয়েরা কী দোষ করেছে? এখনও ১ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। এই মামলার জন্য করতে পারছিলাম না।”
সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, “আমি অবাক হয়ে যাই, এখানে মামলা করেছিলেন বিকাশবাবু। তিনি তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইনজীবী। কেন তিনি এখনও নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন না আমি জানি না। পাওয়া উচিত। ভাবছি সুপারিশ করব।”
আরও দেখুন