কলকাতা: তৃণমূলের পরিষদীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে (TMC Disciplinary Committee) হাজিরা দিলেন ভরতপুরের তৃণমূল হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির মুখোমুখি হওয়ার পর হুমায়ুনের মন্তব্য, দলের শৃঙ্খলা মেনেই চলব। এর আগের মন্তব্য নিয়ে অবশ্য প্রতিক্রিয়ায় নারাজ ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক।
সম্প্রতি তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যার পাল্টা মুখ খোলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। এরপরই ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শোকজ করে, তৃণমূলের পরিষদীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। দল এক পাতার শোকজ লেটার পাঠিয়েছিল। হুমায়ুন কবীর তার জবাব দু’পাতায় দেন। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দল নয়, তাঁর কাছে আগে জাতিসত্তা। সেখানে তিনি আরও বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করিনি, শুভেন্দু নিয়ে মন্তব্য দলের ব্যাপার নয়, জাতের ব্যাপার।’ সূত্র মারফত জানা যায়, তাঁর এই বক্তব্যেই আপত্তি বিধানসভার পরিষদীয় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। এই ধরণের মন্তব্য সংবিধান বিরোধী বলে মনে করে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। এরপরই মঙ্গলবার তাঁকে বৈঠকে ডাকা হয়। এদিন বৈঠক শেষে ভরতপুরের বিধায়ক জানান, “বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সেই ব্যাপারটা এক ক্লোজ়। এখন আমার দলের যে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে তারা আমাকে ডেকেছিলেন। আমাকে কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন। আমার কথাও শুনেছেন। আমি কথা দিয়েছি তৃণমূলের শৃঙ্খলার প্রশ্নে সতর্ক এবং সজাগ থাকব।”
বিধানসভা ভোটের বছরখানেক আগে থেকেই জাত-পাত-ধর্ম নিয়ে ক্রমশ তেতে উঠছে বঙ্গ রাজনীতি। সোমবার বিধানসভার বাইরে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের নিয়ে মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাব, আর ওদের (তৃণমূল) যে ক’টা মুসলমান বিধায়ক জিতে আসবে, বিজেপি সরকারে আসবে, চ্যাংদোলা করে তুলে রাস্তায় ফেলব।” পাল্টা ঠুসো দেওয়ার কথা শোনা গেছিল হুমায়ুন কবীরের গলায়। বিরোধী দলনেতাকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। এই আবহেই তাঁকে শোকজ করে তৃণমূলের পরিষদীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। সূত্রের দাবি, তৃণমূল মনে করে, হুমায়ুন কবীরের ধারাবাহিক মন্তব্য়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তৃণমূল শোকজ় করার পরেও নিজের মন্তব্যে অনড় ছিলেন বিধায়ক। গতকাল তিনি বলেন, “আমার কাছে আমার দল আগে নয়, আগে আমার জাতিসত্তা। তারপরে আমার দলের প্রায়োরিটি। দলের মধ্য়ে আমার প্রচুর শত্রু। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সাহেব বলেছেন, ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হবে। সওকত মোল্লা বলেছে, তাকে বাড়িতে গিয়ে কিছু করে আসা হবে।তাহলে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সওকত মোল্লা, ববি হাকিম, বা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জন্য কোনও শোকজ…আমার ৬ মাসের মধ্যে ২ বার শোকজ হয়েছে।”
আরও পড়ুন: HS Result 2025: কবে উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ? দিনক্ষণ জানালেন সংসদ সভাপতি
আরও দেখুন