সোদপুরের পানশিলা। এই এলাকার বিখ্যাত দুর্গাপুজোগুলোর অন্য়তম পানশিলা ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপুজো। এবার ৭৫ বছরে পা রাখতে চলেছে এবারের দুর্গাপুজো।
এবারের পানশিলা ঠাকুরবাড়ির পুজোর থিম রাজসিক দৃষ্টি। রাজস্থানের মহলের আদলে এই পুজোর মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। প্রচুর কাঁচের ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডব তৈরিতে। শিল্পী শ্রী পার্থ মাইতি। এছাড়াও থিমের প্রতিমা শিল্পী শ্রী সুকান্ত রায়। সাবেকি প্রতিমা শিল্পী শ্রী নন্দ পাল।
রাজস্থানের বিভিন্ন রাজমহলের যে পুরনো স্থাপত্যের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। তা চোখে পড়বে আপনার প্যান্ডেল ঢুকলেই। সার্বজনীন এই পুজো প্রথমবার ১৯৪৯ সালে হয়েছিল। তবে এর ইতিহাস কিন্তু বেশ চমকপ্রদ।
এই পুজোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িয়ে থাকা উদ্যোক্তারা জানান, স্বাধীনতার পর যখন প্রথমবার উদ্বাস্তুরা এদেশে চলে আসেন, তখনও এলাকার নাম পানশিলা ছিল না। কিন্তু সেই উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠী মিলেই ঠাকুরবাড়ির মূল মণ্ডপের নীচে পঞ্চশিলা পেয়েছিলেন। যার ওপর পরবর্তীতে এই মণ্ডপ নির্মিত হয়। আর এলাকার নামও হয় পানশিলা।
সারাবছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকেন ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা। আগামী ৪ অক্টোবর শুক্রবার এই পুজোর শুভ উদ্বোধন হবে। চতুর্থী থেকে সাধারণ মানুষের জন্য মণ্ডপের দরজা খুলে দেওয়া হবে। উদ্বোধন থেকে শুরু করে পুজোর বাকিদিনগুলোও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিখ্যাত শিল্পীরা আসবেন ও পারফর্ম করবেন।
পানশিলা ঠাকুরবাড়ি পুজো কমিটির সম্পাদক শ্রী তুহিন সিনহা বলছেন, ”আমরা সবাই জানি তিলোত্তমার সঙ্গে নৃশংস ঘটনা হয়েছে। আমরা সবাই তাই তিলোত্তমার বিচারের দাবিও তুলছি এই পুজোর মাধ্যমে। আমাদের এখানে মণ্ডপের বাইরে একটি আবক্ষ রাখা হবে তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের দাবিতে। আমরা সবাই চাই দোষীদের যেন কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি হয়।”
তুহিন সিনহা আরও জানান, ”আমরা প্রতি বছর মহানবমীতে মহাভোজের আয়োজন করি। সমাজের যে কোনও স্তরের যে কোনও মানুষের জন্য দ্বার খোলা। তাঁরা প্রত্যেকে আসতে পারবেন। সবাই প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন। এবারও চেষ্টা করা হচ্ছে যে প্রায় দেড় হাজারের মত মানুষকে খাওয়ানোর বন্দোবস্ত যেন আমরা করতে পারি।”
আজ বুধবার মহালয়া। চতুর্থী থেকেই এই পুজো, প্রতিমা সাধারণ মানুষ এসে দর্শন করতে পারবেন। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে পুরােদমে।
শিল্পী পার্থ মাইতি বলছেন, ”মণ্ডপটা আমরা তিনটি ভাগে করার চেষ্টা করেছি। বাহিরমহলে ঢুকতেই একটা রাজমহলে ঢোকার অনুভূতি পাবেন সবই। এছাড়াও ভেতরে পুরোটাই প্রায় মিনাকারি আর্টের শিল্পের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। প্রায় দেড় লক্ষ মিনাকারি কাঁচ দিয়ে মণ্ডপের ভেতরটা সাজানো হয়েছে।
কীভাবে আসবেন পানশিলা ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপুজো দেখতে? যদি শিয়ালদহ মেইন লাইনের ট্রেন ধরেন তবে আপনি সোদপুর স্টেশনে নেমে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে আপনি যে কোনও অটোতে উঠে পানশিলা চলে আসবেন। সেখান থেকে হাঁটা পথে ২-৩ মিনিট পানশিলা ঠাকুরবাড়ি। তাহলে আর দেরী কেন? ঠাকুরবাড়ির পুজো দেখতে আসছেন তো?
Published at : 02 Oct 2024 05:32 PM (IST)
আরও জানুন পুজো পরব
আরও দেখুন