নন্দীগ্রাম : ‘সিঙ্গুর তো ফ্লপ আন্দোলন।’ নন্দীগ্রাম দিবসে মন্তব্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর । তাঁর কথায়, টাটাকে তাড়ানোটা কোনও আন্দোলন নয়। কারো সমর্থন ছিল না। আমরাও যুক্ত হইনি।” বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দল।
কী বলেছেন শুভেন্দু ?
এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, “১৪ মার্চ বদলে দেওয়া যায় না। বশ্যতা বিরোধী সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক দিন। শাসক সংবিধান রক্ষা করার পরিবর্তে যেভাবে তার ক্যাডার এবং পুলিশকে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস করেছিল, তার ক্ষত-বিক্ষত এখানে চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। ১৪ মার্চের পরের দিন ১৫ মার্চ একটি পুরো পুরুষশূন্য গ্রামের সব মহিলাকে শরীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল। আমরা এই দিনটা পালন করি এবং শ্রদ্ধা জানাই। আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা যে দলই করুন না কেন তাঁদেরও অনুরোধ, আসুন আজকের দিনে সবাই মিলে করুন …রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। কিন্তু, শাসক বদলেছে, ব্যবস্থা বদলায়নি। ‘১১-র আগেও যেভাবে নন্দীগ্রামের জনগণ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হত, এখনও তিন মাসের বেশি চন্দন দাস, রাজকুমার মণ্ডলদের মতো অনেকেই…যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। সেই মৃত্যুর সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরা জেলে যাক। তাঁদের যাবজ্জীবন হোক। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা এসব করি না। সনাতনীদের শরীরে এসব রক্ত নেই। কিন্তু, এই যে ভোটার লিস্ট ধরে ধরে, সিপিএম যা করত…এখানে এখনও সেই ব্যবস্থা চলছে। প্রায় ৪০০-র বেশি মামলা নন্দীগ্রামে, মূলত হিন্দুদের উপর হয়েছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে শহিদের উপর দাঁড়িয়ে…সিঙ্গুর তো ফ্লপ আন্দোলন। টাটাকে তাড়ানোটা কোনও আন্দোলন নয়। কারো সমর্থন ছিল না। আমরাও যুক্ত হইনি।”
এনিয়ে শুভেন্দুকে পাল্টা জবাব দিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূলের সোশাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “টাটাকে তাড়ানোর ব্যাপারটা ছিল না। ব্যাপারটা ছিল অবৈধভাবে জমি অধিগ্রহণ…সেই জায়গা থেকে কৃষকদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। ৩১ অগাস্ট ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে প্রমাণ হয়ে গেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেদিনের দাবি সত্যি ছিল। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বেআইনি ছিল। স্বয়ং সর্বোচ্চ আদালত বলেছে। অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোল কতটা সঠিক সেটা সুপ্রিম কোর্টে যেমন একদিকে জবাব দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য কোনও আন্দোলনকারীর বক্তব্য হতে পারে না। একজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির বক্তব্য। নন্দীগ্রাম আন্দোলনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই শুভেন্দু অধিকারী যুক্ত হয়েছিলান। তাও তিনি প্রথম দিকে যাননি। অনেক পরের দিকে এসেছিলেন। সেটা পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষও জানেন। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই আমরা বলতে চাই শুভেন্দু অধিকারীর এই সমস্ত বক্তব্য রাজনীতিক হিসাবে। আমরা মনে করি, একজন প্রকৃত আন্দোলনকারী হিসাবে তিনি যদি একথা বলে থাকেন, সে বক্তব্য সমীচিন নয়।”
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours